কাউকে জোর করে ধর্মান্তকরণ দৃষ্টি গোচর হয় না l রামায়ণ মহাভারত সমগ্র পৃথিবীকে প্রকৃত মানব ধর্মের শিক্ষা প্রদান করে আসছে যুগ যুগ ধরে l
প্রতিনিয়ত সমগ্র মানব জাতির কাছে প্রচার করে চলেছে সত্যের জয় মিথ্যার ক্ষয় দৃৃঢ় প্রত্যয়ের সাথে l যেখানে ধর্মের মূল কথা সততার কথা বিশ্বাসের কথা বলা হয়েছে l
আবারও বহু বছর পর নবদ্বীপে ভগবান শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভুর আবির্ভাব হয়েছিল l তিনি ও প্রেমের বাণী প্রচার করেছিলেন l তখনকার মুসলিম শাসক তাঁকে বারংবার কঠোর শাস্তি দিয়ে অন্যায় ভাবে নানা অত্যাচার করলেও তিনি কিন্তু প্রেমের পথ ছাড়েন নি l তাঁর লড়াইটা ছিল শিক্ষিতের সাথে মূর্খের , প্রেমের সাথে যুদ্ধের , গোঁড়ামির সাথে ধর্মের l তিনি কখন ও হিংসার পথ বেছে নেন নি l আমাদের ভুলে গেলে চলবে না , তখনকার কিছু টিক্কিধারী গোঁড়ামিরাই মহাপ্রভুর বিরোধিতা করেছিল l তিনি মানুষের মধ্যে সচেতনতা আনতে সচেষ্ট হয়েছিলেন l সংস্কৃতে মহাপণ্ডিত ছিলেন l তিনি চাইলে অনায়াসে দল তৈরী করে মুসলিমদের উপর ধর্মান্তকরণের অত্যাচার করতে পারতেন কিন্তু তিনি তা কখন করেন নি l কারণ হিন্দু ধর্ম এই শিক্ষা দেয় না l ধৰ্মান্তকরণের শিক্ষা , অন্য ধর্ম আক্রমণের শিক্ষা হিন্দু ধর্ম দেয় না এমনকি কোনো ধর্মই তা দেয় না l হিন্দু ধর্ম প্রেমের ধর্ম , সহিষ্ণুতার ধর্ম , মানবতার ধর্ম , সর্বধর্ম সমন্বয়ের ধর্ম যা সমগ্র মানব জাতির নিজস্ব ধর্ম হয়ে ওঠা উচিত l
কথায় আছে "যাকে তুমি পিছনে ফেলিতে চাও সেই তোমাকে টানিতেছে পিছে " - অর্থাৎ কাউকে আক্রমণ করে কিছু বললে, কারোর নামে কুৎসা রোটালে , কাউকে অবহেলা করে বাজে কথা বললে তাতে তোমার চরিত্রের খারাপ দিক গুলোই ফুটে ওঠে l তাছাড়া কাউকে আগে রেখে কিছু মন্তব্য করলেই তো তুমি তার পেছনে রয়ে যাচ্ছ l শিকাগোর ধর্ম সম্মেলনে কোন ধর্মগ্রন্থ সর্বোৎকৃষ্ট তার বিচারে সমগ্র ধর্মগ্রন্থ একত্রিত করা হয়েছিল l হিন্দু ধর্মের নিকৃষ্টতা প্রমানের জন্য শ্রীমদ্ভাগবদগীতা কে সমস্ত গ্রন্থের তলায় রাখা হয়l সবাই সবার ধর্মের উৎকৃষ্টতার কথা বলা শেষ হয়ে গেলে স্বামী বিবেকানন্দ কে সুযোগ দেওয়া হয় , তখন তিনি বলেন, যে সমস্ত উৎকৃষ্টতর ধর্মগ্রন্থ এখানে আছে সেই সমস্ত গুলো কে ভাগবদ্গীতা অনায়াসে অবিকৃত ভাবে ধারণ করে আছে , তাই ভাগবদ্গীতার উৎকৃষ্টতার কথা আর মুখে কি বলবো l
কলি যুগের ভীষ্মদেব স্বামী বিবেকানন্দ শিকাগোর ধর্ম সম্মেলনে কি বলেছিলেন ? কোনো ধর্ম কে কি আক্রমণ করেছিলেন নাকি ছোট করেছিলেন ? না তিনি তা কিছুই করেন নি ! তিনি মানবতার ধর্ম দিয়ে সারা পৃথিবী জয় করেছিলেন l তাঁর আগের সমস্ত বক্তা সমগ্র পৃথিবীর মানুষের কথা বলেন নি , বলেছেন নিজ ধর্মের কথা , নিজ ধর্মের মহানুভবতার কথা , নিজ ধর্মের মানুষের কথা , গেয়েছে নিজ ধর্মের গুণ গান আর আক্রমণ করেছে সমগ্র ধর্মের মানুষ কে, অপমান করেছে অন্য সমস্ত ধর্ম কে , ধর্মের মূল কথা কে l কিন্তু বিশ্ববাসীর হৃদয়ে যার বাস সেই মহামানব সমগ্র বিশ্ব বাসীকে মানবতাধর্মের মধ্য দিয়ে ভাই বোন পিতা মাতা সম্বোধনে তাঁর অদৃশ্য বাহূযুগলে জড়িয়ে ধরেছিলেন l তিনি শান্তির বার্তা প্রচার করেছিলেন , মানুষকে ভালোবাসার শিক্ষা দিয়েছিলেন আর কোনো ধর্মের নাম না করে ও মানবতার ধর্ম সনাতন ধর্ম প্রচার করেছিলেন l যে ধর্ম মানুষকে ভালোবাসতে শেখায় যে ধর্ম মানুষকে সহ্য করার ক্ষমতা যোগায় l
তিনি প্রমান করতে চেয়েছিলেন যে হিংসা নয়
ভালোবাসাই একমাত্র পথ বিশ্ব জয় করার l
কত শত ধর্মীয় গোঁড়ামি পৃথিবীকে গ্রাস করতে চেয়েছিলো যুগের পর যুগ ধরে কিন্তু অসফল থেকেছে বারংবার আর থাকবেই l কোনো ধর্মের মূল কথা খারাপ হতে পারেনা ! কোনো ধর্ম গ্রন্থ ভুলে ঠাসা হয় না !কোনো ধর্মের সৎ মানুষ হিংসার বাণী প্রচার করেনা ! যারা এসব করে তারা কোনো ধর্মের মানুষই না আসলে তাদের কোনো ধর্মই নেই l তারা মানুষের এবং সমাজের অমঙ্গল ও চির শত্রু l ধর্ম ভালো কিন্তু ধর্মীয় গোঁড়ামি ভালো না l
যারা ধর্মীয় গোঁড়ামিতে বিশ্বাসী তাদের থেকে বন্য কুকুর অনেক কম হিংস্র l ধর্মীয় গোঁড়ামি কোনো দিন কাম্য নয় সে যে ধর্মের ই হোক না কেন l
কৌশিক হালদার l
3 comments:
👌👌👌
Nice
U r great.sotti khub valo hoa6a
Post a Comment