Tuesday, February 9, 2021

￰সংরক্ষণ

আজকে আমি যে বিষয়ে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাইছি তা খুবই স্পর্শকাতর (sensetive ) !
তাই সবাইকে আগে থেকে অবগত করতে চাইছি যে কেউ বিষয়টিকে ব্যাক্তিগত ভাবে নেবেন না ।আমার দৃষ্টি ভঙ্গিতে এবং আমার ক্ষুদ্র মস্তিস্ক প্রসূত সীমিত চিন্তা ভাবনার ফসল হলো এই লেখা । আমার এই কাজটা যে অনেকেরই বিশ্বাসে আঘাত করবে তা আমি অকপটে হলেও স্বীকার করছি । কিন্তু আপনারা যদি ব্যাক্তিগত দিক থেকে না ভেবে সমস্ত দিক গুলি বিবেচনা করেন তাহলে হয়তো আমার মতের সাথে আপনার মত মিললেও মিলতে পারে ! 

যাই হোক আসল কোথায় আসি - সংরক্ষণ ব্যাপারটা শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয় সমগ্র ভারতবর্ষ জুড়ে একটি তর্ক সাপেক্ষ বিষয় । এ বিষয়ে বহু মত বহু দিন ধরে ছিল এবং তা এখনো প্রবহমান। অনেকেই বলেন সংরক্ষণ কেন থাকবে সবার সমান অধিকার থাকা প্রয়োজন । ওরা কেন সব জাায়াগায় অগ্রাধিকার পাবে ? আমরা ওদের থেকে ভালো রেজাল্ট করেও কেন আমরা সঠিক সুযোগ পাবো না ? একদম ঠিক কথা বলেছেন ।
আমিও এতো দিন তাই স্বীকার করতাম যে কেন এরকম টা হবে ? 

আমিও সংরক্ষণ এর অন্তর্গত এবং তার জন্য শিক্ষা স্থলে ও তার সুবিধা নিতে গিয়ে হেনস্থার স্বীকার হয়েছি বহুবার আমি নিজে। তখন নিজের প্রতি ঘৃনা বোধ হয়েছে আবার নিজে কে বুঝিয়েছি- এই ভেবে যে যিনি আমাকে হেনস্থা করলেন তিনি বা তার পরিবার হয়তো এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত তাই । এটা ও তর্কের বিষয় । 

এই সংরক্ষণ বিষয়ে বহু বিচার হয়েছে , সেখানে দেখা গেছে নানা মুনির নানা মত । নিৰ্দিষ্ট করে আজ ও কিছু বলা যায় নি ।

সদ্য কিছু দিন আগে এই বিষয়ে সোশ্যাল মিডিয়াতে একটা বড়ো ঝড় উঠেছিল । সেখানে প্রচুর মানুষ বাদানুবাদ ঝগড়া এমনকি কুৎসিত ভাষায় আক্রমণ করতে ও কাউকে কাউকে দেখা যায় , যারা আক্রমণ করেছিল তারা নাকি সবাই ভদ্রলোক ! যাই হোক ।

আমি আবার ও বলছি কেউ বিষয় টিকে ব্যক্তিগত নেবেন না । আমি চাই সবাই আমার এই কথা গুলো বিবেচনা করে আমার ভুল ত্রুটি সংশোধন করে দেবেন ।আজকে আমার একটা বন্ধুর সাথে উনিভার্সিটিতে ভর্তি নিয়ে কথা হচ্ছিলো , তার আক্ষেপ যে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে তার সুযোগ হয়নি । সে ভালোছাত্র , মানুষ হিসাবে সে ততধিক ভালো । তার ও সংরক্ষণ নিয়ে মত -"আমরা বেশি নম্বর পেয়েও সুযোগ পেলাম না কিন্তু sc st ছেলে মেয়েরা তুলনামূলক কম নম্বর পেয়ে ও সুযোগ পেলো ।" শুনে আমার ও তাই মনে হলো সত্যি তো ! অনেক সাধারণ কাস্টের ছেলে মেয়েরা বেশি নম্বর পেয়েও সুযোগ পায়নি ভাল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার । এবার বলি - সংরক্ষণ যিনি শুরু করেছিলেন ডক্টর বি আর আম্বেদকর তিনি 10 ও বেশি ভাষা জানতেন এবং 2 টি পিএইচডি ডিগ্রী এছাড়াও প্রায় বিশ্বের অন্যতম 8 ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন । তিনি ভারতের সংবিধান রচনা করেছিলেন । তাই তাঁর প্রতিভা , পর্যালোচন ক্ষমতা , শিক্ষা এবং দূর দৃষ্টিতার উপর সন্দেহ প্রকাশ আমাদের ধৃষ্টতা ছাড়া কিছুই নয় । কিন্তু মানুষ মাত্রেই ভুল হয় , কিংবা তখনকার পরিস্থিতি তে মানুষের সামাজিক অবস্থা পর্যালোচনা করে তিনি যা করেছিলেন এতবছর পর তার ব্যাবহারিক দিক ও গ্রহণযোগ্যতা একরকম না ও থাকতে পারে ! 

তিনি তখনকার সমাজ ব্যবস্থার উপর ভিত্তি করে যে ব্যবস্থা করেছিলেন আমার মনে হয় তা আজ ও অক্ষুন্ন আছে । সংরক্ষণ সারা জীবন থাকবেনা , একটা সময় যখন সর্বত সবাই সর্বোপরি স্বাবলম্বী হয়ে উঠবে ও সমানাধিকারে বিরাজমান থাকবে তখন সংরক্ষণ এর প্রয়োজন পড়বেনা । আর এখন যখন সংরক্ষণ এর বিরুদ্ধে কথা উঠছে তখন কোনো না কোনো ভাবে পিছিয়ে পড়া মানুষ গুলো একটু হলেও স্বাবলম্বী হচ্ছে । যেদিন সম্পূর্ণ স্বাবলম্বী হয়ে যাবে সেদিন নিজেরাই তাদের সংরক্ষণের দাবী তুলে নেবে , আর সেই দিন টি বেশি দূরে নেই ।।

এবার আসি বন্ধুটির কথায় , তার কথার যুক্তি সঙ্গত জবাব আমার কাছে ছিল কিন্তু অন্য দিকে একটা মানবিক দিক ও খোলা ছিল যা দিয়ে আমি ওকে বোঝাতে সচেষ্ট হয়েছি । ওর বাবা মা ও ওর বংশগত দিক থেকে ওরা সবাই প্রায় শিক্ষিত ।কোনো কোনো আত্মীয় বড়ো কোনো চাকরি ও করে , কাকা জেঠার ছেলে রা ভালো কোনো কোম্পানি চাকরি ও করে । কলকাতার নামি জায়গায় ঘর বাড়ি ও বেশ ।ঠিক তার উল্টো দিকে দাঁড়িয়ে আমি - প্রত্যন্ত একটা গ্রাম থেকে আসা , বাবা জমিতে চাষবাস করে কোনো রকমে চলে । হাতে গোনা কয়েকটি শিক্ষিত মানুষের ওই গ্রামটিতে বাস । পুরো গ্রামটিতে একজন ও সরকারি চাকরি করে না । এরকম হাজারো পিছিয়ে পড়া ছেলে মেয়ে এগিয়ে আসছে যাদের কোনো ভিত নেই , কোনো বংশগত গতানুগতিকতা নেই , নেই কোনো অর্থের স্বচ্ছলতা । তবুও তারা নিজেদের উপর ভরসা করে আর সংরক্ষণ এর উপর সামান্য ভর করে এগোচ্ছে । তার ঠিক উল্টো দিকে অসংরক্ষিত ছেলে মেয়েরা বংশের চাকরি করা বা ব্যবসা করা গতানুগতিকতা পাচ্ছে , সাথে তাদের কোনো আর্থিক অনটনেও পড়তে হচ্ছে না সেভাবে । তাদের শিক্ষিত পরিবার ও পথ দেখাচ্ছে । কিন্তু পিছিয়ে পড়া ছেলে মেয়েরা সেই সুযোগ সুবিধা গুলো সঠিক ভাবে পায় না , তবুও যারা ভালো ফলকরছে তারা নয় প্রতিভাশালী নয় তারা সামাজিক ও আর্থিক প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হয় নি । 

আবার এটা বলা ভুল হবে যে অসংরক্ষিত ছেলে মেয়েরা গরিব হয় না । হাঁ অনেক সাধারণ কাস্টের ছেলে রা গরিব পরিবার থেকে আসে , তবে তা তুলনামূলক কম । আবার সংরক্ষিত অনেক ছেলে মেয়েরা ও স্বচ্ছল পরিবার থেকে আসে তবে তাদের পরিমান সাধারণের থেকে তুলনামূলক পরিমানে যৎসামান্য ।  
এই সমস্ত দিক বিবেচনা করে হয়তো আজ ও দেশের প্রধান বিচারালয় ও বিজ্ঞ মানুষেরা সংরোক্ষনের পক্ষে দাঁড়িয়ে । 

সর্ব সাধারণের জন্য কোনো মতামত গ্রহণ করলে তা বিশাল ও ব্যাপক একটা দিক পর্যালোচনা করেই নিতে হয় , তাই ছোট খাটো কিছু ভুল ত্রুটি থেকেই যায় । কারণ এতো বড়ো একটা দেশে যেখানে প্রায় 150 কোটি জনসংখ্যা সেখানে বহুল পরিমান মানুষের জন্য নির্দিষ্ট যে নিয়ম করা আছে তার মধ্যে ব্যাতিক্রম বৈশিষ্ট্য যুক্ত কিছু পরিমান মানুষের জন্য আলাদা আইন করা সত্যি কষ্ট সাধ্য । বর্তমান দিনে দেশের ও রাজ্যের সরকার যেভাবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে তাতে কোনো শ্রেণীর মানুষের আর সেভাবে কোনো কষ্ট থাকবে বলে মনে হয় না !

Tuesday, February 2, 2021

ধর্ম (part 3)

বর্তমান পরিস্থিতি তে বিজ্ঞান মনস্ক হওয়া উচিত ।সচেতন নাগরিক ও সুস্থ মানুষ হিসাবে বেঁচে থাকা উচিত , কোনো ধর্মান্ধ অসুস্থ মস্তিস্ক নিয়ে বেঁচে থাকা যায় , মানুষ হওয়া যায়না ।

সর্ব ধর্ম সমন্বয় পৃথিবীতে শান্তি ফিরিয়ে আনতে পারে । যত দিন না সবাই এক হয়ে লড়বে ততো দিন মহান কর্মকাণ্ডে বিফলতা নেমে আসবে গভীর অভিশাপ রূপে । তার উৎকৃষ্ট প্রমানের জন্য একটু ইতিহাস জানা দরকার , যদিও ভারতের স্বাধীনতার   ইতিহাস কারোর অজানা নয়। হিন্দু, মুসলিম, শিখ, জৈন, ইত্যাদি বহু ধর্মীয় মানুষ সেই স্বাধীনতা আন্দোলনের মহা যজ্ঞে যদি  ঝাঁপিয়ে না পড়তো তাহলে হয়তো আজকের দিনেও আমরা বিদেশী বরাহদের শৌচালয় পরিষ্কার করতাম ।

আর আমার মনে হয় ভগবান ও হয়তো চেয়েছিলেন ভারতীয়রা পরাধীনতার কটু স্বাদ আস্বাদন করুক ! যদিও তার আগেও এরা পরোক্ষ ভাবে পরাধীন ই. ছিল ! পরাধীনতা নামক শিকলের দাগ যে কোনো ধর্ম দেখে গায়ে আঁকা থাকেনা তা ভারতীয়দের বোঝার দরকার ছিল । ভারতীয়রা যখন জাত- পাত - বর্ণ- ধর্ম নিয়ে ব্যস্ত ছিল ঠিক তখনই একদল সুবিধাভোগী ষড়যন্ত্রকারী উচ্চবিত্ত সম্পন্ন মানুষ নিজেদের পুঁজি গুছিয়ে নিচ্ছিল গরিব অবুঝ সাধারণ মানুষের রক্ত শুষে । সঙ্গ দিয়েছিলো সেই সাদা মুখো বাঁদরদের , ঠিক যেমন এখন কিছু ধর্মীয় গোঁড়ারা সাধারণ মানুষকে ভুল বুঝিয়ে ধর্মের অদৃশ্য কালপাশে বেঁধে নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব লাগিয়ে দিচ্ছে , আর সেই ফাঁকে সাধারণ মানুষের সর্বস্ব লুট করে তুলে দিচ্ছে সেই নাম জানা পুঁজিবাদীদের হাতে । এদের গায়ের রং একরকম না হলেও উদ্দেশ্য কিন্তু একই । তাই আমাদের সবার সচেতন হওয়া খুব প্রয়োজন , না হলে আমাদের উত্তরসূরিদের জন্য চরম বিপদের বিষাক্ত কুয়ো আমরা নিজেরাই খনন করে রাখছি নিজেদের অজানতেই। 

19 জানুয়ারী ব্রিসবেনের অস্ট্রেলিয়া বনাম ভারতের টেস্ট ম্যাচ টা আমাদের আবার মনে করিয়ে দেয় যে মহম্মদ ও ঠাকুরের( MD Siraj & Shardul Thakur) যৌথ লড়াইটাই ভারতের জয়টাকে নিশ্চিৎ করেছিল । তাই আমরা যদি ধর্মীয় গোঁড়ামী নামক বিষ বৃক্ষটাকে ধীরে ধীরে উৎপাটন করবার চেষ্টা করি তাহলে হয়তো একদিন আমরা অবশ্যই সফল হবো তার আশা রাখতে  পারি । 

                কৌশিক হালদার ।

আজও, তোমায় ভালোবাসি ।

 আজও, তোমায় ভালোবাসি । জানি তোমার জানা পৃথিবীর , আমি এক অজানা আতিথি। হঠাৎ আগমনে , ধ্বংস করে দেবো না তোমার। তবুও ধূমকেতুর মতো  আমার হৃদয়টি ...