Saturday, June 7, 2025

আজও, তোমায় ভালোবাসি ।

 আজও,

তোমায় ভালোবাসি ।

জানি তোমার জানা পৃথিবীর ,

আমি এক অজানা আতিথি।

হঠাৎ আগমনে ,

ধ্বংস করে দেবো না তোমার।

তবুও ধূমকেতুর মতো 

আমার হৃদয়টি কে 

ছিন্ন ভিন্ন করার আশঙ্কা

করি, গভীর রাতের

বিষাক্ত অন্ধকারে।

ঘুম না আসা চোখে

প্রতীক্ষা করতে করতে,

প্রচণ্ড রোদে

শুকিয়ে যাওয়া গোলাপের 

পাপড়ির মতো চোখের 

পাতা দুটিতে ক্লান্তি নামে।

আমি আজও তোমায় ভালবাসি।

Tuesday, May 20, 2025

কতো দিন!

 কতো দিন তোমায় দেখি না,

কতো দিন পাই না তোমার স্পর্শ।

কতো দিন হলো তুমি বুকে মাথা রাখো না,

কতো দিন অনুভব করি না তোমার চুলের সুগন্ধ।

কতো কথা বলার ছিল তোমাকে,

থাক ! কিছু কথা না হয় না বলাই থাক।

সব রহস্য ফুরিয়ে গেলে,

লেগে যায় দূরে যাওয়ার অভিশাপ।।



      ।। কৌশিক হালদার।।

Tuesday, February 25, 2025

পরমাত্মীয়

 জানিনা কোথা হোথে আসিয়াছ মোর নীড়ে।

পার করি শত বাধা , শত সহস্র মানুষের ভিড়ে ।।  

যখন একাকী নির্জনে বসি আছি নদী তীরে। 

হঠাৎ আসিলে কাছে , অবহেলে গভীর নীরে।। 

বুঝি নাই কিছু, কেবল ভাবিলাম মনে মনে।

যাহা পাইয়াছি আমি , বহুকষ্টে তাহা পায় সাধু জনে।।

 


কামিনী কাঞ্চন কত সবই পায়ে ঠেলে, 

আসিয়াছ শূন্যের পানে দিতে শুধা ঢেলে।

যে শূন্যেরে আপন করিয়াছ পূর্ণেরে অবহেলে।

তুমি তো জানো সবই, তাহলে কেনো এভাবে এলে? 


সবই ছাড়িয়া আসিলে যখন, থাকিয়া যাইও দয়া করে।

এ শূন্যেরে পূর্ণ করিয়া বাঁধিয়া রাখিও আপন বাহুডোরে।।

আমারও পরানে আছে যতো টুকু রস, সবই দিব ঢালি।

তুমি শুধু বাসিয়া ভালো, সাজাইয়া রাখিও বকুলের ডালি।।


এ মধু সময়ে এ মধু লগনে, আছি আমি বহু দুর।

দূর কেবল মোদের দুরত্ব,

হৃদয়ে দোঁহে মিলে পান করিতেছি সুমধুর।।

Wednesday, August 7, 2024

রাষ্ট্রনেতার জবানবন্দি

 আজকে যে আমাকে ফাঁসি দিচ্ছ, 
আচ্ছা বলতে পারো আমার অপরাধ টা কি? 

আমি তো কিছুই করিনি।
কেবল নিরস্ত্র মানুষের হাতে 
অস্ত্র তুলে দিয়েছি। 
এটা আর কি এমন বেপার ।
 
নিরপরাধ মানুষের কাঁধে 
অপরাধের বোঝা তুলে দিয়েছি। 
সে আর কি এমন কথা ,
পৃথিবীর ইতিহাসে এ আজ নতুন নাকি?
সব নেতাই তো এমন করে এসেছে ,
আমি না হয় একটু বেশিই করে ফেলেছি।

আর .....আর .... 
আর তো তেমন মনে পড়ছে না!
হ্যা পেয়েছি;
নিষ্কলঙ্ক কিছু জাতির গায়ে ,
আর কিছু ঐতিহাসিক ব্যাক্তির 
উপর কলঙ্কের কালো কালিমা
লেপ দিয়েছি । 
ধুর ছাই কি বা হয়েছে এমন? 
এই তো কদিন আগে পাশের দেশে ,
মাথায় মুত্র বিসর্জন করলো। 
তাতে কি সেই ব্যাক্তির কিছু হয়েছে? 
সেই কোন যুগে মরে পালিয়ে গেছে 
তাদের কে নিয়ে এতো আদিখ্যেতা কেনো বাপু?

আর না খেতে পাওয়া মানুষ গুলো কে 
খাবারের লোভ দেখিয়ে কয়েক টা বন্দুক 
ধরিয়ে দিয়েছি হতে। 
তার বেশি তো আর কিছু না, ভাবলাম
কি আর করবে কিছু করে খাক, বেচারা 
খেতে পায় না ঠিক করে। 

আর যদি জিজ্ঞাসা করো... 
তাহলে কি বলা যায়!?
ও আচ্ছা মনে পড়েছে, আসলে অনেক 
ফিরিস্তি তো তাই সময়ে মনে পড়ে না আর কি।
হ্যা; কয়েকবার শুধু  ভোটে জেতার জন্য 
পাশের দেশের সাথে হাত মিলিয়ে জঙ্গি হামলা 
করে দিয়েছি, কয়েক জন মরে ছিল বটে।
আমি তো তাদের ক্ষতি পূরণ দিয়েছি। 
আর সেটাও যদি আমার কচি নেতারা খেয়ে 
নেয়, বা তার কচি বউ কে ভোগ করার জন্য
একটু তাগাদা করে সেও কি আমার দোষ নাকি? 

আর দেশের যারা উদ্যোগ পতি আছে ,
তাদের কে কয়েক বার , ওই ধরুন কিছু 
লক্ষ কোটি টাকা ঋণ মুকুব করেছিলাম। 
তাতে দেশের মুদ্রা স্ফীতি হয়েছিল। 
কিছু চাষি ঋণ না শুধতে পেরে মরেছে 
আত্মহত্যা করে, তাতে আমার কি 
আমি কি বলেছি নাকি মরতে? 

আর যদি বলো , তাহলে বলবো; 
কৃষক আন্দোলন হয়েছিল কয়েক বার 
আমার গদি থাকা কালীন। 
কিছুই তেমন হয় নি , কয়েকশো মূর্খ
চাষি মরেছিল নিজেদের ইচ্ছায়। 
সবজির দাম তো ঠিক ছিল আমি জানি,
আর পেঁয়াজ তো আমি খাই না তাই 
আমার জেনে ও লাভ নেই কিছু।

আর .... আর.... আর ..... 
হ্যা , স্কুল আর কলেজে, বা সরকারি জায়গায় 
কোনো নিয়োগ হয় নি , এই যা  ।
তার জন্য কিছু হাজার ছেলে মেয়ে 
আত্মহত্যা করেছিল,
এছাড়া তো আমার আর কিছু মনে নেই।

আর কত মনে করে করে বলবো ? 
আমি এমনিতে স্কুল এ খুব কম গিয়েছি?  
যাইহোক দেশের লোক তো ভালই আছে বাপু।
খামোকা আমাকে ডেকে কেনো কষ্ট দিচ্ছ .?


Monday, June 10, 2024

মন পাখি।

জীবনের এই সমুদ্রতে কখনও জোয়ার কখনও ভাটি।

কখনও জল উঠবে ভরে কখনও তোর দেবে ফাঁকি।।

মাঝিরে তোর নৌকা ওরে হবে যে উথাল পাতাল।

হৃদয়ের আবেগ ওরে যখন তোর হবে মাতাল।।


মন মাঝি তোর মনের দাঁড় টা ধরে থাক শক্ত করে।

ওই ঝড় যতই আসুক আছড়ে পড়ুক যতই জোরে।।

একদিন তোর হবে রে জয় তুই সব ফিরেই পাবি।

যদি তুই মনে জোর না রাখিস হবে তোর সবই ফাঁকি।।


কতো দিন ডোর বি রে তুই দে না তোর পালটা তুলে।

পাখির মতো মুক্ত পাখায় যাবি তুই প্রাণের ভুলে।।

কে বলে কেউ নেই তোর? দেখ একবার নয়ন মেলে।

তাকিয়ে আছে গোটা বিশ্ব , হৃদয়ের দরজা খুলে ।।


মুক্ত আকাশ ডাকছে তোকে, উড়ে যা সেই আকাশে ।

অনেক তো বন্দী ছিলি, গা ভাসা জোর বাতাসে।।

দেখবি! জগৎ তোকে ডাকছে দুহাত তুলে।

ভুলে যা অতীত যতো , ধুর ছাই! এসব কেউ মাথায় তোলে?


তুই আজ মুক্ত পাখি , তোর আছে আকাশ বড়ো।





Saturday, May 18, 2024

।। মুক্তি ।।

 মুক্তি!

 কাকে বলে জানো?

যদি জানতে চাও তাহলে জিজ্ঞাসা করো 

সেই মা পাখি কে, 

যে নিজের বাচ্চা কে 

নির্দ্বিধায় মুক্তি দেয় ওড়ার জন্য । 

তুমি ও যদি জানতে চাও ,

তাহলে ভালবাসো কাউকে ,

সে যেই হোক, সে মানুষ নাই বা হলো 

তবু ভালবাসো, ভালোবেসে তাকে 

মুক্তি দাও। 

ভালোবাসাই তো হলো মুক্তি। 


 



Wednesday, April 24, 2024

।। প্রিয়তমা ।।

তোমায় পেয়েছি অনেক তপস্যায়,

বহু পূণ্য কর্মের ফল তুমি।

তোমায় দেখেছিলেম ,

হয়তো কোনো এক পুরোনো মন্দিরে।

হয়তো বা কোনো এক গভীর অরণ্যে 

যেখানে তুমি একাকী বসেছিলে ,

আমার অধীর অপেক্ষায়।


Monday, April 22, 2024

।। বিচ্ছেদ।।

 বিচ্ছেদ কাকে বলে জানো? 

না তুমি তা জানো না ;

জিজ্ঞাসা করে নিও সেই শিশু কে,

জন্ম মাত্র মাতৃ হারা হয়েছে যে।


বিচ্ছেদ কাকে বলে জানো?

না তুমি তা জানতে পারো না; 

জিজ্ঞাসা করে নিও সেই নাবিক কে,

নিজের ভুলে মাঝ সমুদ্রে জাহাজ 

ডুবিয়েছে যে।


বিচ্ছেদ কাকে বলে জানো? 

না তুমি বোধ হয় তা জানো না;

কালবৈশাখী ঝড়ে সদ্যজাত 

বাচ্চা সহ বাসা উড়ে গেছে যে পাখির 

সে জানে ।


বিচ্ছেদ কাকে বলে জানো? 

না তুমি তা জানতেই পার না;

বর্ষায় মিলনরত,  বজ্রপাতে প্রাণ 

হারিয়েছে যে ময়ূর , 

তার প্রণয়ী ময়ূরী তা জানে।


বিচ্ছেদ কাকে বলে জানো? 

না তুমি তা অনুভব করতে পারো না;

নতুন বর্ষার জলে প্রাণ পেয়েছে যে গাছ,

নতুন ফুলে ফলে ভরে উঠেছে যার শাখা,

হঠাৎ দমকা হওয়ায় ভেঙে পড়া 

সেই গাছ কে জিজ্ঞাসা করো, 

সে জানে।


বিচ্ছেদ কাকে বলে জানো? 

না তুমি তা কি করে জানবে!

নিঃশব্দে বুকের পাঁজর 

ভেঙেছে যে প্রেমিকের ,

সে জানে। 


বিচ্ছেদ ? 

তা তুমি কি করে জানবে ! 

তুমি তা জানতেই পার নি। 



      ।। কৌশিক হালদার।।



 



 



Sunday, March 31, 2024

তুমি আমার এমনই একজন।

তুমি আমার এমন ই একজন ,

যার স্পর্শ পাওয়ার জন্যে 

আকুল হয়ে বসে থাকি সারাদিন।

যাকে একবার দেখবো বলে 

কতো অতীব সুন্দরী  কে  ও

অবহেলা করি অবলীলায়। 


তুমি আমার এমনই একজন ,

যার হৃদয় এ স্থান পাবো বলে 

একান্তে তপস্যা করে চলেছি ।

যাকে জীবনের চরম সত্য বলে 

মেনে নিয়েছি বহু পূর্বে।


তুমি আমার এমনই একজন,

যার পদ্ম পাতার মতো কোমল

 হাত দুটো একবার আদর করে দিলে 

পৃথিবীর কঠিনতম কষ্ট ও দুর হয়ে যায়।

যাকে জড়িয়ে ধরলে হৃদয়ের 

বিষাক্ত রক্ত ক্ষরণ ও বন্ধ হয়ে যায় 

এক নিমেষে।


তুমি আমার এমনই একজন, 

যার মুখের হাসি আমার সারাদিন এর 

ক্লান্তি দূরে সরায় এক পলকে ।

যাকে একবার দেখবো বলে 

দূর দূরান্ত পাড়ি দিতে রাজি আছি।


তুমি আমার এমনই একজন,

যার মুখ টা না দেখলে 

রক্ত গোলাপ ও যেনো ফ্যাকাসে মনে হয়।

যার পাহাড়ি ঝর্নার মতো হাসি টা 

আমাকে মাতাল করে তোলে 

সমুদ্রে মিশতে চাওয়া চঞ্চল নদীর মতো।


তুমি আমার এমনই একজন,

যাকে ভগবানের থেকে পাওয়া 

শ্রেষ্ঠ উপহার বলে মনে হয়। 

যার সোনা মুখ একবার দেখলে 

সব দুঃখ ও সুখ  মনে হয়।


তুমি আমার এমনই একজন,

যার মুখের কথা আমার কাছে 

জীবনের চরম সৌভাগ্য বহন করে ।

যাকে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত 

পাশে দেখতে চাই। 


তুমি আমার এমনই একজন, 

যাকে ছাড়া জীবনে বেচেঁ থাকা 

জল ছাড়া মাছের মতো  ।


তুমি আমার এমনই একজন, 

যদি আমার হাত টা ছেড়ে দাও কোনো দিন, 

তাহলে সেদিন বুঝে নিও এ পৃথিবী আমার নেই। 

যেদিন তোমার হাত ছাড়বো বুঝবে সেদিন 

নিজের জীবন ও ছেড়ে যাবে অনায়াসে।।

 











Saturday, February 10, 2024

।। যদি কোনো দিন।।

 যদি কোনো দিন 

হঠাৎ মাঝ রাতে কোনো স্বপ্ন দেখে 

দুরু দুরু বুকে ভয় পেয়ে 

ঘুম ভেঙে উঠে 

তোমাকে জড়িয়ে ধরি!   

তুমি কি আমাকে বোকে

দূরে সরিয়ে দেবে? নাকি 

আদর করে কাছে টেনে,

তোমার উষ্ণ বুকের মধ্যে

 আমাকে জড়িয়ে ধরবে? 


যদি কোনো দিন 
অচেনা কোনো রাস্তায় 
আমাকে হঠাৎ দেখতে পাও।
তুমি কি অবাক হয়ে 
তাকিয়ে থাকবে আমার পানে? 
নাকি? দৌড়ে এসে 
গলা জড়িয়ে ধরে অভিমানের 
সুরে  বলবে কোথায় ছিলে ? 
কাছে আসো নি কেনো এতো দিন? 

যদি কোনো দিন 
আমি হারিয়ে যাই
কোনো এক জনারণ্যে 
বা কোনো এক মেলায়।
তুমি কি সেদিন খুব কাঁদবে ? 
পা ছড়িয়ে বসে , ছোটো শিশুর 
মতো? যেনো হারিয়ে গেছে
তোমার সব থেকে প্রিয় খেলনা।।






Friday, February 9, 2024

যদি তোমায় বলি।

 যদি তোমায় বলি,
গভীর অন্ধকারাছন্ন একাকী রাস্তায় 
হাতে হাত রেখে একটু হেটে আসি। 
তুমি কি আমার সঙ্গ দেবে ? নাকি
বিরক্ত হয়ে হাত ছেড়ে দেবে আমায়? 


যদি তোমায় বলি,
গভীর জঙ্গলের মধ্যে কেউ কোথাও 
নেই, কেবল তুমি আর আমি 
বহুযুগ ধরে বসবাস , তুমি কি 
খুশি থাকবে? নাকি
মুখ ফুলিয়ে কেঁদে বলবে 
ভালো লাগে না , বাড়ি চলো এবার।

যদি তোমায়  বলি,
এক জ্যোৎস্না রাতে সমুদ্র বক্ষে 
নোঙ্গর দেওয়া এক ফাঁকা জাহাজ এ
মুখ মুখি বসে কাটিয়ে দি সারা রাত ।
তুমি কি খুব রাগ করবে? নাকি
ভয়েই ছেড়ে দেবে আমার হাত? 

যদি হঠাৎ বৃষ্টি দিন ,
তুমি আর আমি একাকী বন্দী 
কোনো এক অজানা শহরে।
আর হঠাৎ বজ্রপাত কান ফাটা
আওয়াজ করে, 
তুমি আমার পাশেই আছো 
ভয়ে আর ঠান্ডায় সিথিয়ে।
তখন যদি ! 
তোমায় বলি,
জড়িয়ে ধরতে চাও? লুকিয়ে 
পড়তে চাও আমার বুকের মাঝে? 
তুমি কি তখন অভিমান করবে? 
নাকি চুপটি করে ভয় পাওয়া 
শিশুর মতো আমাকে জাপটে ধরবে? 


Saturday, December 2, 2023

।।বর্ষা তুমি খুব নিষ্ঠুর।।

এক বিকাল বেলায় বসে আছি বারান্দায় 

দুপুর থেকে জানি না কি একটা ভেবে 

ঘুম আসেনি দুচোখে। 

তার মধ্যে একরোখা বর্ষা ও লেগেছে , 

মানছেনা কোনো বারণ 

ঝরে পড়ছে অঝরে। 

মনে হয় বিদ্যাপীঠ নামক যে 

জেল খানায় বন্দী শত শত হার না 

মানা প্রেমিক আছে,

এটা তাদের কাছে অভিশাপ।  

দূর দূর হতে যারা অসহায় হয়ে 

এখানে পড়তে এসেছে, সকল 

মায়ার বাঁধন ছিঁড়ে , তাদের কাছে এই 

বর্ষণ হৃদয় বর্ষণের সমান।। 









Sunday, November 26, 2023

।।চির ক্লান্ত।।

 আজ আমি চির ক্লান্ত।

হঠাৎ কাল বৈশাখী ঝড়ে 

বাসা উড়ে গেছে যে পাখির 

তার মতো।


আজ আমি চির ক্লান্ত।

তীব্র সাইক্লোন ঝড়ে

মাঝ সমুদ্রে জাহাজ ডুবি 

হয়েছে , যে নাবিকের

ঠিক তার মতো। 


আজ আমি চির ক্লান্ত।

মাঝ নদীতে 

নৌকার দার ভেঙে

 গেছে যে মাঝির,

ঠিক তার মতো। 


আজ আমি সত্যি ক্লান্ত।

সূর্য ঢলে পড়লে 

ঘরে ফেরা একঝাঁক 

পাখির থেকে হঠাৎ রাস্তা 

হারিয়ে ফেলা শালিকের মতো ।


আজ আমি সত্যি ক্লান্ত।

পাহাড়চূড় থেকে 

খসে পড়া এক খন্ড 

পাথরের মতো। 


আজ আমি সত্যি ক্লান্ত ।

দেশ ভাগের সময়,

পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন 

হওয়া ছোটো ছেলেটার মতো।


আজ আমি চির ক্লান্ত।

নির্বাসনে আছে যে প্রেমিক,

হঠাৎ হৃদয় বিদারক অভিশাপ গ্রস্ত

মেঘদূতের যক্ষের মতো।


আজ আমি চির ক্লান্ত ।

পৃথিবীর পথ বেয়ে হেঁটে চলা 

জীবনের লক্ষ্যহীন 

যাযাবর পথিকের মতো। 


আজ আমি সত্যি ক্লান্ত ।

মাঠে খেলা একদল বাচ্চাদের 

থেকে দূরে দাড়িয়ে দেখতে 

থাকা অচ্ছুৎ বালকটির মতো।


আজ আমি চির ক্লান্ত।

পৃথিবীর জন অরণ্য থেকে 

বহুদূরে কোনো জঙ্গলে বহুবছর

 একা বাস করা কিরাতের মতো।


আজ আমি চির ক্লান্ত।

গোপনে হৃদয় ভেঙেছে 

যে প্রেমিকের , তার যে গভীর 

আর্তনাদ,  ঠিক তার মতো।


আজ আমি চির ক্লান্ত।

স্তন পানরত শিশুর থেকে 

দূরে সরিয়ে হত্যা করা হয়েছে 

যে মা এর ঠিক তার মতো।


আজ আমি চির ক্লান্ত।

জনসমাজ থেকে উপড়ে

দূর সমুদ্রের দ্বীপে নির্বাসিত 

করা হয়েছে যে প্রেমিকের 

 ঠিক তার মতো।


আজ আমি সত্যি ক্লান্ত ।

উত্তাল সমুদ্রের মাঝে 

নোঙর করা ছোটো 

নৌকার মতো।


আজ আমি সত্যি ক্লান্ত ।

তারা হীন রাতে 

একা রাত জেগে থাকা 

এক ফালি চাঁদের মতো।


আজ আমি সত্যি ক্লান্ত ।

ঝড় ঝঞ্ঝার রাতে 

নিভে আসা একমাত্র 

কেরোসিনের বাতির মতো।


আজ আমি সত্যি ক্লান্ত ।

মিলন মেলার মাঝে 

দূরে দাঁড়িয়ে একমনে চিন্তিত

 বিরহ গ্রস্ত প্রেমিকের মতো।।

সত্যি আমি আজ খুবই ক্লান্ত ।  



             । কৌশিক হালদার।























Sunday, November 12, 2023

কথা ছিলো।।

 কথা ছিলো, 

হাতে হাত রেখে

সারাজীবন পথ চলার।

কথা ছিলো ,

সব দুঃখ কষ্টে একে 

অপরের পাশে থাকার। 

কথা ছিলো, 

শত বাধায় ও গতিশীল 

ঝর্ণার মতো বয়ে চলার।

কথা ছিলো,

জীবনের সব চরাই

উতরাই ভেঙে দেওয়ার।

কথা ছিলো,

যেদিন মেঘ করবে, 

বৃষ্টি হবে খুব ।

সেদিন দুজন ভিজবো অনেক 

বানভাসি ওই চোখের জলে , 

ভাসিয়ে দেবো দুঃখ।।

কথা ছিলো ,

যদি কষ্ট আসে 

আসে বুক ফাটা কান্না ।

একে অপরের জল মুছিয়ে 

বলবে থাক ; আর না।।

কথা ছিলো ,

যদি কখনও জমে 

অবিশ্বাস এর কালো মেঘ। 

বিশ্বাস এর ঝড়ো হওয়ায় 

তা  থাকবে না ক্ষণেক ।।

কথা ছিলো,

কেউ ভুল বুঝলে , 

দূরে সরে যায় যদি।

যতই আঘাত দিক না কেনো 

তবু থাকবে দরদী।।

কথা ছিলো,

যদি কেউ ভুল পথে যায়,

আসতে না চায় ফিরে ।

যত দূরেই যাক না চলে  

তবু ধরে রাখবে বাহুডোরে।।

কথা ছিলো ,

যতই খারাপ দিন আসুক 

যতই আসুক দুঃসময়।

কেউ কারোর হাত ছাড়বে না 

বহু কষ্টেও থাকবে সহৃদয়।।

সব কথা  আজ

কথা হয়েই রয়ে গেছে,

গেছে সবই ভুলে ।

কথা ছিলো মনে রাখবার ,

ভুলে গেছে সব কিছুই 

মনের বেভুলে।।

 


          ।।কৌশিক হালদার।।

     










 


 










Tuesday, September 26, 2023

চির নবীনা

হে মাতা 
তুমি সেই দেবী বাক্ 
দেবী সংরাষ্ট্রী ।
আপন মহিমায় আজও 
চির নবীনা 
  চির পুরাণী।।

সেই কোন প্রাচীনে 
স্থান দিয়েছিলে
স্নিগ্ধ কোমল আঁচলে
তোমার ও শান্ত তরুতলে।
মাগো তা আজ রিক্ত প্রায়
চির ব্যথিত চির সিক্ত
ব্যাথার করুণ অশ্রু জলে।।

সাগোত্র অসগোত্রেরে 
সধর্মী বিধর্মীরে।
আপন সন্তান সম স্থান
দিয়েছিলে অচিরে।।

মাগো ! 
আজ তারা বলীয়ান
আপন বাহুবলে ।
স্তনরুধিরপায়ী শিশু 
আজ দংশিছে আপন
মাতার বক্ষস্থলে ।। 

তবুও তুমি চির মাতৃসুলভা
চির কল্যাণময়ী।
কভু নাহি অবহেলে 
আপন সন্তানেরে।।

বহুবার খন্ডিতা হয়েছো
বহুবার আঘাত হেনেছে 
তোমারই মাতৃ ক্রোড়ে। 
তবু তুমি শান্ত চিত্তে 
আপনারে খণ্ডিতা করিয়াছো
প্রচ্ছন্ন রক্ত অশ্রুপাতে।।

তুমি তো মাগো চির বিনয়নী
বহু কষ্টেও রয়েছ মুক।
 আর মাগো কোরো না সহ্য
আর নিজেকে দিও না দুঃখ ।।

যে তোমারে খন্ডিতে চায় মাগো
যে তোমাকে করে বঞ্চনা ।
তারে তুমি মাগো করিও না ক্ষমা 
তারে দিও তুমি যম যন্ত্রণা।। 

তোমার ই বক্ষ বিভেদ করিতে
যে হয় মাগো উদ্ধত।
তারই বক্ষে পাষাণ রাখিয়া 
তুমি হও মা উদ্যত।।

তোমার রক্ষা করিতে মাগো 
যদি না পারি আমি এই অধম ।
নিজ রক্ষা তবে নিজেই করিও
করিয়া মাগো ভীষণ রণ।।


                
                   ।।কৌশিক হালদার।।








Monday, April 24, 2023

থেকে যাবে?

 হাটিয়াছি অনেক পথ এ পৃথিবীর প্রান্তরে

ক্লান্ত শ্রান্ত হয়েছি বহুবার অন্তরে অন্তরে।

যদিও একাকী চলার পথে পথচারী ও কিছু 

হেঁটেছিল গুটি কয়েক পথ, ক্লান্ত হয়ে 

তারাও ফিরেছে আপন গৃহে ।

শুধু আমি আজও হেঁটে চলেছি 

দিগন্তহীন পথ বেয়ে। 

দারিদ্রতা ও আছে চিরদিন পরম বন্ধু সেজে ।


আরও অনেক পথ চলা বাকি, তুমি সঙ্গ দেবে নাকি?

যদি কারণে অকারণে দিতে চাও, তাহলে 

এটা বুঝে নিও , আমার পরম বন্ধু হয়তো থেকে 

যাবে চিরকাল । যদি তার সাথে 

তোমার ও হয়ে যায় সখ্য  , তারপর ও তুমি কি 

আমার হাত টা শক্ত করে ধরে থাকবে? 

নাকি .....?

      


      ।। কৌশিক  হালদার।।











Friday, April 7, 2023

যদি বলি ভালোবাসো

  যদি বলি ভালোবাসো 

সব কিছু ছেড়ে নয় , 

সবাইকে সাথে রেখে। 

যদি বলি ভালোবাসো 

আমার ভালো খারাপ ,

সব টুকু নিয়ে।

যদি বলি ভালোবাসো 

সব কিছু ভুলে নয়, 

তোমার সব টুকু দিয়ে। 

যদি বলি ভালোবাসো 

নিজের ইচ্ছে গুলো ভুলে নয়,

দুজনের ইচ্ছে গুলো মিলিয়ে।

যদি বলি ভালোবাসো 

মিথ্যা কাছে থেকে নয়,

সত্যি ভালোবেসে ।

যদি বলি ভালোবাসো 

আপন ভেবে নয়, 

আপন হৃদয় দিয়ে।

তাহলে কি তুমি ,

 সত্যি ভালোবাসবে???

            


               ।। কৌশিক হালদার।।










Friday, March 31, 2023

।।অন্য তুমি।।

 না চাওয়াতে পেয়েছি অনেক ,

তাই তো আমি চাই নি কোনো কিছু। 

তুমি আমায় যতোই ঠেলো দূরে,

তবু আমি হাঁটবো তোমায় পিছু।।


জীবনের ওই প্রখর রোদে,

তুমি ছিলে দক্ষিণা ওই বাতাস।

আঁধার কালো গভীর রাতে ,

ছিলে তুমি স্নিগ্ধ আলোর আভাস।।


যেদিন খুব মেঘ করেছিল,বাজ 

পড়েছিল মনের চিলে কোঠায়। 

তখন তুমি ঢেকেছিলে আঁচল,

 বৃষ্টিভেজা শীতল জল কণায়।।


যেদিন হঠাৎ বিকেল, কোকিল

 ডাকলো সুমধুর গান গেয়ে, 

তখন তুমি আপন মনে , চিন্তা 

মগ্ন বসন্তেরই আভাস পেয়ে ।।


যদি তুমি আপন মনে , 

খরস্রোতা পাহাড়ি এক নদী।

তখন আমি টুকরো পাথর,

ভালোবেসে ভাসিয়ে নাও যদি।।


যখন আমি আঁধারি আকাশ,

জগৎ জোড়া কালো।

তখন তুমি একফালি স্নিগ্ধ 

চাঁদের ভুবন ভরা আলো।।


যখন আমি আকাশ জুড়ে , পরন্ত

রোদের আভায় সোনালী ওই আলো।

তখন তোমার মুখে হাত, ক্লান্ত 

ঘুম চোখে বাসতে চাইছো না ভালো। 

তখন আমি বাসায় ফেরা পাখি, 

মুছিয়ে দিয়ে ক্লান্ত দুটি আঁখি ।

বলবো তোমায় , দ্বন্দ্ব ভুলে ফেলো, 

চিন্তা নেই, বাসবে ই তুমি ভালো।। 

          

                         ।।কৌশিক হালদার।।

Tuesday, March 21, 2023

"ভেবেছিনু "

 ভেবেছিনু ,-তুমি

 দিগন্তহীন মরুভূমির

একমাত্র মরুদ্যান ।

বুঝিনি তুমি নিষ্ঠুর 

এক মৃগতৃষ্ণা।। 


ভেবেছিনু, তুমি 

তপ্ত গ্রীষ্মের ক্লান্তিহরা

দক্ষিণা শান্ত বাতাস।

বুঝিনি তুমি আকাশের

কোণ ঘিরে আসা প্রচণ্ড

কালবৈশাখীর আভাস।।


ভেবেছিনু , তুমি 

শ্রান্ত পথিকের ক্লান্তিহারিনী

 শান্ত শীতলা নদী।

বুঝিনি , তুমি হৃদয়ান্তক্ষয়ী 

পাহাড়ি ঝর্ণা তীক্ষ্ণ স্রোতস্রিণী ।।


ভেবেছিনু , তুমি

খোলা জানালা ,

শান্ত নীল আকাশ।

বুঝিনি ,তুমি কাল কুঠুরি, 

গরাদের বিষাক্ত নিঃশ্বাস।।


ভেবেছিনু , তুমি 

বিনিদ্রা কমোলিনী 

হৃদয়ের ই আরাম ।

বুঝিনি তুমি বহুগামিনী

রক্তক্ষয়ী ব্যারাম।।

          ।।কৌশিক হালদার।।

Sunday, June 26, 2022

ধর্ম ৪

মানবতা ধর্মই হলো প্রকৃত ধর্ম। বাকি সব তো নকল । ঘষা কাচের চশমা পড়িয়ে রেখেছে আমাদের,  ধর্মের নামে অধার্মিক ধার্মিকরা । কিছু টা দেখতে পাচ্ছি আর কিছু টা পাচ্ছি না। ভাবছি কি দরকার কষ্ট করে ওতো দূরে দেখার ? এই তো বেশ ভালই আছি , নতুন করে আর কি দেখবো ? যা দেখার তো আমাদের বাপ ঠাকুর দাদারা ভালো বুঝে দেখে যা করার করে গেছে। এমন করে বলে যেনো নিজের চোখ নেই বুদ্ধি নেই কিচ্ছু নেই , বুড়ো দাদু যাওয়ার সময় ওর চোখ আর মাথার খুলি উপড়ে নিয়ে চলে গেছে।

নিজের ছেলে মেয়ে গুলো কে বাস্তব বোধের পরিচয় না দিয়ে , নিজেদের গৌরবময় অতীত সম্পর্কে পড়াশুনা না করিয়ে দাও না চাকর তৈরি করার কারখানা তে ঢুকিয়ে যেখানে যত্ন সহকারে চাকর তৈরি করার চেষ্টা করা হয়। আর যন্ত্র মানব তৈরি করা ছেড়ে দিয়ে নিজেরা যন্ত্র হওয়ার থেকে মুক্তি পাওয়ার চেষ্টা করো। নাহলে কদিন  পরে দেখবে যন্ত্র মানব ও মুচকি হেসে বলবে ওই দেখ - আমাদের মতো না !  ছোটো বাচ্চা হোচট খেয়ে পড়ে গেলে , তাকে যদি মাটিতে লাথি মেরে রাগ পুষিয়ে নিতে বলো, তাহলে একদিন নিজে ভুল করেও  সে  তোমার থেকে কোনো কারণে আঘাত পেলে একই কাজ করবে না , তা কে বলতে পারে? 
  

 আগে নিজেরা মানবিক হও। তারপর তো অন্য দের কে মানবিকতার শিক্ষা দেবে তাই না। তোমার ছেলের সামনে যদি তুমি তোমার বাবা মা কে খেতে না দাও , বৃদ্ধাশ্রমে  রেখে আসো , ভালো না বসো তাহলে তুমি কি করে আশা করো তোমার ছেলে তোমাকে বৃদ্ধাশ্রমে রেখে আসবে না। আসল ধর্ম তো এখানে , ধর্ম কথার  প্রাসঙ্গিকতা তো এখানে যেখানে মানবতা বিরাজ করে । ফণীমনসার গাছ লাগিয়ে আম খাওয়ার কথা ভাবলে কেমন করে হবে। 

 আমাদের পোড়া দেশে বুদ্ধির কোনো বালাই নাই। যে জন খাটে তার দৈনিক মজুরি ৪০০ টাকা আর বিদ্যালয় এর পার্টটাইম শিক্ষক এর মজুরি মাসে ১৫০০ টাকা , অদ্ভুত। 
নামেই জাতিভেদ নেই , সমানতন্ত্র , গণতন্ত্র কিন্তু আবার  মাঝে মধ্যে তাদের কে এই প্রায় অর্ধেক স্বাধীন দেশে দূরবীন দিয়ে খুঁজতে হয়, কি জ্বালা। 
  
মন্দির আর মসজিদ নাকি ধর্মশালা । কোনো দিন তো দেখলাম না ধর্মের পাঠ দিতে , গুটি কয়েক ছাড়া বাকি সবাই তো খালি কামান দাগায় আদৌ কি কোনো দিন ভালো কাজ করেছে। আজকে দিনে দাড়িয়ে ভারত  এর  যে সমস্ত বড়ো বড়ো প্রত্যেক টা মন্দির মসজিদ এর নামে ধর্মশালার নামে যা সম্পত্তি আছে তার হিসাব কেউ কোনো দিন জানে , না কেউ জানতে দেয়। একবার ভাবো যদি বেলুড় মঠ এর মতো একটা প্রতিষ্ঠান একা দাড়িয়ে এতো মানুষের শিক্ষা , প্রযুক্তি , স্বাস্থ্যর   ভার নিতে পারে তাহলে , অন্য যে সমস্ত বড়ো মন্দির মসজিদ , ধর্মশালা গুলো কেনো তাদের কে  মানব কল্যাণ এ  ব্যাপৃত করবে না । আজকে মানুষ এর কাছ থেকে ভগবানের দোহাই দিয়ে গাদা গাদা টাকা নিয়ে , নিজেরা ফুলে ফেঁপে উঠে , দেশ বিদেশ এ গাড়ি বাড়ি করছে আর মূর্খ জনগন নিজের এই দুর্দশার কথা ভুলে গিয়ে স্বর্গে গিয়ে কিভাবে ভালো থাকবে তার চিন্তায় ব্যতি ব্যাস্ত হয়ে মরছে। আর  কালো টাকা বাঁচাতে ধর্মশালার আশ্রয় নিচ্ছে । হায় রে মানব জাতি  ,,,,,,, এই ধর্ম নামক রাক্ষস টাই  একদিন তোদের সব ধর্ম গিলে খাবে। 

Thursday, April 7, 2022

।।বহুরূপী।।

হৃদয় পান করে 
কখন যে ছোট জন্তু টা 
আস্ত একটা গিরগিটি হয়ে উঠেছে 
তা জানা যায়নি।

তবে প্রথম যেদিন রং বদলায় ,
জন্মদাত্রী বুঝেছিল ;
সেদিন  আর ভাবে নি ।

ভেবেছিল বোধ হয় ; এখন সবার যা 
ঠিকানা , আমারও বোধ হয় তাই। 

কিন্তু রাতে ঘুমের ওষুধ খাওয়া 
ঘুমটা যখন অচেনা শহরের
 ফুটপাতে ভাঙলো , তখন বোধ হয় 
সাথে বুকের কয়েকটা জীর্ণ 
  পাঁজরও ভেঙেছিল।।
             ।। কৌশিক হালদার।।




Thursday, October 28, 2021

৩ রা শ্রাবণ ।

আজ অনুর জন্ম দিন , ১৯ বছর পূরণ করলো আজ সে। বাড়িতে বাবা মা ও খুব খুশি সাথে তার বন্ধু বান্ধবীরাও আছে। ছোটো একটা ব্যাবস্থা ও হয়েছে বাড়িতে। সারা বাড়িতে উজ্জ্বল আলো ও যেনো মেতে উঠেছে তার রূপের উজ্জ্বলতাকে  মলিন করার হিংসায়। বিদ্যুতের আলো যার উজ্জ্বলতায় হার মানে সে আজ কোন অন্ধকারে ? সবাই খোঁজ করছে তার, কিন্তু যার জন্য এতো কিছু কোথায় গেলো সে ? 


অনু এখন শোভনের বাড়িতে । শোভন পুজোর কিছু দিন আগে ভেবেছিল ওর জন্ম দিন টা অন্য ভাবে পালন করবে। কিন্তু মাঝে মাঝে কয়েকদিন মান অভিমানের কারণে সব মাথায় থেকে বেরিয়ে গিয়েছিল তার । বেশ রাগ ও হয়েছিল দুজনার ই , কেউ কারোর সাথে কথা বলা তো দূরে কথা হোয়াটস অ্যাপ এর প্রোফাইল পিক যাতে না দেখতে পায় তার জন্য ব্লক করে রেখেছিল। কষ্ট পেতো দুজনেই , যেমন ভাবে   ডান হাত কাটুক বা বাম হাত কষ্ট পায় শরীর ঠিক তেমন । ফেসবুক এর ফেক একাউন্ট থেকে মাঝ রাতে ফটো দেখে বালিশ ও ভিজতো শোভন এর। একদিন রাতে অনুর সাথে সেই হ্যান্ডসম ছেলে টাকে ফটো তে দেখে মনে মনে খুব কষ্ট হয়েছিল তার । মনের দুঃখে অনেক পাগলের মতো উলটো পাল্টা ভেবেও ছিল সে ; 
     
     বেশ ভালোই আছি আমি , 
         আমাকে কাঁদানোর 
    কিংবা হাসানোর আজ 
          কেউ নেই ঠিক! তবে 
   নিজেকে নিয়ে আর ভাবিনা ।

 প্রবল আনন্দে মেতেছি নিজেকে
 নিয়ে, হয়তো কোনো দিন হয়ে যাবো 
  পাগল, তার ঠিক নেই , জীবনের 
  কিয়দংশ সুখ ও হয়তো আমার 
              জন্য অবাঞ্ছিত 
  জানিনা কোন অকারণে ।।

আজও মনে পড়ে তোমায় 
গোপনে , লুকিয়ে কিংবা ভ্রমে, 
    যদিও জানি ! 
পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সুখীও 
হয়তো , আজ তোমাকে 
        হিংসা করে ।

আচ্ছা ও খুব যত্ন করে 
না, তোমায়? খুব ভালোবাসে 
তোমাকে ? পূরণ করে ঘুমিয়ে
দেখা তোমার স্বপ্ন গুলো?

 যদিও আমি তো 
জেগে জেগে ই দেখতাম।

আর বোধ হয় আমার 
পাগলামী গুলো মনে 
পড়ে না? চাপা পড়ে 
গেছে তা তোমার 
   ভালোবাসার , 
ঘোলাটে ভাটার টানে  ।।


অনুর যে গোলাপি রঙের টেডি বিয়ার টাও হঠাৎ করে আষাঢ়ের মেঘের জলে ভিজে যাবে  তা ও ভাবে নি। তবুও  মাঝে মধ্যে ভিজতো লোনা জলে ।

মাঝ রাতে কোলবালিশ জড়িয়ে স্বপ্ন দেখতো ,কোনো এক রাস্তার ধরে দাড়িয়ে দুজন ; অনুর সেই জ্যোৎস্না মাখা মুখ খানা শোভন এর বুকের মাঝে অস্ফুটে কিছু বলতে চাইছে , আর শোভন ও দুহাত দিয়ে জাপটে আছে তাকে। যেনো কোনো দিন ও হারাতে চায়না কোনো মতে। হঠাৎ জানালার বাইরে মেঘের ভীষণ গম্ভীর গর্জনে ঘুম ভেঙে উঠে বসে শোভন, অবাক হয়ে দেখে কোথায় তার অনু ! 
অনু কিন্তু নিজের জিদ ভুলে আজ শোভনের বাড়িতে এসেছে। বাধ্য শোভন ও ফিরিয়ে দিতে পারেনি তাকে কিছুতেই। এর মধ্যে হালকা বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে আকাশে, বর্ষা কাল। সন্ধায় কেমন যেনো গুমরে ছিল আকাশ, তারই ফলশ্রুতি ঘটছে এখন । ৮:৩০ টা বাজলো, অনু তাকে তৈরি হতে বললো তার বাড়িতে যাওয়ার জন্য, যথা রীতি বেরিয়ে পড়লো দুজন । অনুর স্কুটি তে বেশ আদরে বাড়ি পৌঁছালো দুজন।

একটু একটু করে রাত বাড়লো বাড়ি ফিরতে থাকলো বন্ধুরা । সবাই অনুকে উপহার দিয়েছে কিন্তু যার কাছ থেকে পাওয়া উপহার তার জীবনে অফুরন্ত খুশি এনে দিতে পারে  সে এখন ও বিমুখ । দুজনের মধ্যে একটু দুরত্ব সৃষ্টি হয়েছিল বলে , প্রথম শুভেচ্ছা জানানো হয় নি তার একটু দেরি হয়ে গেছে। রাত ১১:০০ হলে শোভন অনুর কানে কানে কিছু একটা বললো । এতক্ষণ তার মুখটা বর্ষার মেঘের মতো থাকলেও এবার যেনো মেঘ সরে একটা উজ্জ্বল হাসি ফুটে উঠলো। তৎক্ষনাৎ বাড়ির বাইরে যেতে চাইলে বাবা মা একটু অনুৎসাহি হয়ে পড়েছিল। কিন্তু শোভনের কথার জাদুতে দুজনেই হার মানলো।

এবার দুজনে বাইপাস ধরে সো সো শব্দে পৌঁছালো তাদের পুরানো সেই জায়গায়। যেখানে তারা আগে দেখা করতো । কিন্তু কেনো যে শোভন এই রাতে তাকে এখানে আনলো কিছুতেই সে ব্যাপারটা মাথায় এলো না । কারণ জন্ম দিনের ব্যাপার টা একটু আগেই মিটে গেছে সে তাকে ঠিক রাত ১২:০০ টায় জানায় ও নি। শোভন আগে থেকে ভেবে রেখেছিল যে অনুর জন্ম দিনটা অন্য ভাবে পালন করবে, কিন্তু ঝগড়া ঝামেলা সব বানচাল করে দিয়েছিল। তবুও সে অনুর বাড়ির অনুষ্ঠানের ফাঁকে বন্ধুদের কে সব ব্যাবস্থা করে রাখতে বলেছিল । সেই মতো ছোটো একটা আয়োজন ।

বাইপাস টার যেখানে ওরা দুজন দাড়িয়ে ঠিক তার দুই পাশের একটি পাশে খাল আর ওপর পাশে প্লটিং করা বাউন্ডারী দেওয়া বিশাল ফাঁকা জমি এখন ঠিক রাত ১১:৫০ । দুজনে স্কুটি থামিয়ে সেখানে দাড়াবার সাথে সাথে কোথা থেকে দুটো বাইক একটা প্যাকেট দিয়ে আবার ফিরে গেলো। একটু হতোবাক  হয়েছিল অনু  কিন্তু কোনো প্রশ্ন করেনি ।
 তখন ও আষাঢ়ের মেঘ সমস্ত জলরাশি বর্ষণ না করে সামান্য একটু জমিয়ে রেখেছিল তাদের জন্য । ঝিরি ঝিরি বৃষ্টি নামলো। শোভন প্যাকেট থেকে সুন্দর একটা কেক বের করে স্কুটির সিট এর উপর রাখলো, অল্প আলোয় দেখে বেজায় খুশি অনু । তার যে আজ আনন্দের বাঁধ ভাঙছে। একটা প্লাস্টিক এর ছুরি ও বের করে সে আস্তে আস্তে অনুর হাতে দিল। 
 

 অনু উৎফুল্ল হয়ে কেক এর মধ্যে ছুরি বসাতে গেলে শোভন বাধা দিয়ে  একটা মোমবাতি জ্বালালো কেক এর মাঝে । গভীর রাতে মেঘে ঢাকা আকাশের নিচে ঝিরি ঝিরি বৃষ্টিতে যেন তারা দুজন নিশীথ রাতের জোনাকির মতো জ্বলছিল। যে শ্রাবণ অনুকে জন্ম দিয়েছিল সেই যেনো তাকে ফিরে পাওয়ার আশায় অশ্রু বর্ষণ করছিল। অনু এবার দৃড সংকল্প নিয়ে কেক এর মধ্যে ছুরি বসিয়েছে আর সেই গম্ভীর অপরূপ রাতের একমাত্র প্রত্যক্ষ সঙ্গী শোভন হলেও তার সাথে সাথে শুভেচ্ছা জানতে ভুল করেনি রাতের ঝিঁঝিঁ পোকা ও কামার্ত ব্যাঙ গুলি । তাদের কামার্ত ডাক যেনো আরত বেশি করে আসক্ত করছিলো ওদের দুজনকে । একটুকরো কেক দুজন দুজনের মুখে দিয়ে একটা গভীর নিরবতায় দুজনের হৃদ স্পন্দন একই ছন্দে ধকধক ধকধক করছিলো , এক প্রবল উচ্ছাসে ভেসে বেড়াচ্ছিল তাদের মন । স্রোতের প্রবল টানে যেমন বিলাতি পানা দিশাহীন ভাবে বয়ে চলে, কোনো বাধা মানে না, গতি যেখানে অপার। সেই গভীর অন্ধকার ময়  জলকণা ভেদ করে হঠাৎ দৈত্যের মতো ছুটে আসা ব্রেক ফেল লরির আঘাতে পাশের বাউন্ডারী সেলিব্রেট করে জন্ম দিন , আর পিশে যাওয়া দুটি শরীর পাঁচিলে চেপে হাত বাড়ায় আর একটা হাতের অপেক্ষায়। ততক্ষণে শোভন এর রক্তাক্ত হাতখানি ঝুলে পড়েছে পৃথিবীর টানে মাটির কাছাকাছি। চিৎকারে ডাকার চেস্টা বিফল হয় অনুর। শত চেষ্টায় কোনো মতে গলার স্বর বের হয় না । পাশে পড়ে থাকা স্কুটি র সাইড লাইট এখনও দপ দপ করে জ্বললেও দুটি প্রাণ এর স্পন্দন যেখানে এক হয়ে ধক ধক করেছিল তা বিদায় নিচ্ছে চিরকালের মতো । অনুর চোখ দিয়ে টপ টপ করে জল পড়ছে আর গোঙানির শব্দ মিশে যাচ্ছে বোবা বাতাসে ।।



Thursday, July 22, 2021

বিরহিনী

বহু কাল বহুদিন গনি
ভরা বাদর দিনে
জানালায় বসে বিরহিনি 
ভাবিছে একাকী আপন মনে।

চাতকির মতো চেয়ে
বহু অপেক্ষায় 
যদি বিন্দুবৎ শান্তি পায়
বরফ শীতলে।

কোথা সে দিয়াছে পাড়ি 
সকল আপন ছাড়ি 
তবুও কি আশা ত্যাগ
 করিয়াছে, বিনিদ্রা একাকী নারী?

ঘন বর্ষণ প্রবল বর্ষা
চোখের কোনে জমাট বাষ্প,
ধুইয়ে দেয় নোনা বর্ষা।

হয়তো চাতকের মতো 
শীর্ণ শরীর, তবুও 
পদ্ম বীজের মতো
দৃঢ হৃদয় ভরসা ।।

        কৌশিক হালদার।

Thursday, July 8, 2021

দিবানিদ্রা

হায় রে মানব সমাজ 
মেকি যুক্তি তর্ক থেকে
  বিরতি নেবে কবে ?
ঘন্টা খানেক এর সঙ্গে সুমন 
  টাও তো বিরতি নেয় 
যুক্তি - তক্কো র মাঝে ।

সভ্যতার সব অসভ্যরা 
 মিথ্যা সভ্য সেজে।
সমাজ  চূড়োয় থাকছে বসে ,
গিলতে সবই রেখেছে 
পেট টা মেজে ।

এ যুগের এই শিক্ষা যেনো 
সোনার পাথর বাটি ।
যা পাচ্ছে খাচ্ছে বেচে 
দেশটাকে করবে মাটি ।

শিক্ষকেদের জাত তো গেছে 
আজ শিক্ষা ও ধর্ম  ধর্মী।
শিক্ষকতা না ব্যাবসা 
তাতো যায়না বোঝা 
শিক্ষক তাই  শিক্ষাকর্মী ।
  
ছাত্ররা সব বড়ই মেধাবী 
নম্বর পাচ্ছে ছাঁকা।
ফুচকা যেমন দেখতে বড়ো
কিন্তু অভ্যন্তর ফাঁকা।

শিক্ষা নামক ভিক্ষা নিয়ে
যুব সমাজ হচ্ছে হীন।
সময় মতো মাইনা পেয়ে 
আরেক শ্রেণী সুখনিদ্রায় লীন।

ভাবছো যারা,
কি হবে সব বৃথা ভেবে?
-চলছে যেমন চলুক ।

দিবানিদ্রা ভাঙবে সেদিন 
যেদিন পড়বে পিঠে 
দাসত্বের ই চাবুক ।।

         কৌশিক হালদার।

Tuesday, July 6, 2021

ক্লান্তি

আজ আমি ক্লান্তিময়
    চির ভগ্ন হতে 
ছুটে চলেছি দিবারাত্র ,

প্রাণপনে ধরতে চেয়েছি তোকে 
  স্পর্শ পেতে হৃদয়ের 
ক্লান্তিহীন নির্লজ্জের মত,
চেয়ে থেকেছি তোর মুখপানে ।

জানি ভালোবাসতে লজ্জা নেই 
ঘৃনা নেই, নেই অবসর ,
অবসাদ গ্রস্থতা,তবু ও 
তো পীড়িত হই ব্যাথিত হই।
শত ছিন্ন হয় হৃদয়খানি ,
     ফিরে পেতে চায় ,
চায় মুক্তি এ হৃদয় ।
কত বার নিয়েছে তো বিদায় ।
ক্ষমাহীন সম্পর্কের 
টানাপোড়েন হতে ,
তবুও কি পেরেছে ?
বিদায় নিতে!
       পেরেছে কি?
 তোকে ফিরিয়ে দিতে? 
মুখ ফিরিয়ে নিয়েছি কি , 
তোর ডাকে ?

কতশত বার তুলেছিস ঝড়
কত না বজ্রপাত ,আঘাত
 হেনেছে সুপ্ত ভালোবাসায় ,
কত শত তীক্ষ্ণ কথার শর ,
বিঁধেছে হৃদয় গাত্রে ।

স্বপ্ন গুলিকে করেছে
      ছিন্ন ভিন্ন ,
তাই আজও ,
           মায়াজাল বুনে যাই 
ঘুম না আসা দুচোখ দিয়ে ,
গভীর নিশীথ 
                 রাত্রে ।।

Wednesday, June 16, 2021

কর্ম ফল

একঝাঁক বড় মাছ
করিত খেলা মিঠা নদী জলে
হঠাৎ আসিল জোয়ার
 ভাসাইলো গা নোনা জলে মাকে অবহেলে l 
 
  তুচ্ছ ভাবি করি অপমান
   আপন জননীরে করিয়া ভর্ৎসনা
  কোহিলে, হয়েছি রুদ্ধশ্বাস
কিছুদিন গেলে মরিয়া যাইবো মোরা l

ছাড়িয়া আপন কাটিয়া বাঁধন
চেনা বেড়াজাল ভেদিয়া
পড়িলে অথৈ সাগরে
যেথা সলিল অনল সমান l

যেদিক পানে চায় দিশা পায় নাই
উৎকন্ঠিত প্রাণ মিত্রাভাবে
যুক্তিতর্ক দিয়া
 না মিলায় তাহারা কিছুই l

কেবল ই গাজোয়ারি
হইতেছে কণ্ঠরোধ
দেখিয়া অবশেষে
ডাক  পাড়িল  মা মা বলিয়া l
ততদিনে মা হইয়াছে কঠিন ভবিষ্যতে 
অতীতের ই ইতিহাস পড়িয়া  l 
            
                    কৌশিক হালদার l

Saturday, March 20, 2021

বিনিদ্রা বালিকা

হায় রে ! 
   রবি ঠাকুর ,
যদি আসতো ফিরিয়া  
হৃদয়হীন তোমার সেই পোস্ট মাস্টার ,
দেখিতে পাইতো যন্ত্র নেত্রে  
কি কষ্টে বাঁধিয়াছে বুক 
কাটিয়াছে কত কাল 
তার বিনিদ্রা রত্নার l

কোথায় মিলাইয়া গেলো নদীর বাঁকে
তবুও বালিকা হৃদয় আজও তার ছবি 
                                           আঁকে।
অমূল্যে রে মূল্যহীন ভেবে 
দূরে সরাইলে নির্লাজে। 
একদিন তব হৃদয় রক্তাক্ত হইবে,
ভ্রমে হীরক আঁকড়াইয়া 
                        কাঁচে।।
        

                  কৌশিক  হালদার 

Tuesday, February 9, 2021

￰সংরক্ষণ

আজকে আমি যে বিষয়ে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাইছি তা খুবই স্পর্শকাতর (sensetive ) !
তাই সবাইকে আগে থেকে অবগত করতে চাইছি যে কেউ বিষয়টিকে ব্যাক্তিগত ভাবে নেবেন না ।আমার দৃষ্টি ভঙ্গিতে এবং আমার ক্ষুদ্র মস্তিস্ক প্রসূত সীমিত চিন্তা ভাবনার ফসল হলো এই লেখা । আমার এই কাজটা যে অনেকেরই বিশ্বাসে আঘাত করবে তা আমি অকপটে হলেও স্বীকার করছি । কিন্তু আপনারা যদি ব্যাক্তিগত দিক থেকে না ভেবে সমস্ত দিক গুলি বিবেচনা করেন তাহলে হয়তো আমার মতের সাথে আপনার মত মিললেও মিলতে পারে ! 

যাই হোক আসল কোথায় আসি - সংরক্ষণ ব্যাপারটা শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয় সমগ্র ভারতবর্ষ জুড়ে একটি তর্ক সাপেক্ষ বিষয় । এ বিষয়ে বহু মত বহু দিন ধরে ছিল এবং তা এখনো প্রবহমান। অনেকেই বলেন সংরক্ষণ কেন থাকবে সবার সমান অধিকার থাকা প্রয়োজন । ওরা কেন সব জাায়াগায় অগ্রাধিকার পাবে ? আমরা ওদের থেকে ভালো রেজাল্ট করেও কেন আমরা সঠিক সুযোগ পাবো না ? একদম ঠিক কথা বলেছেন ।
আমিও এতো দিন তাই স্বীকার করতাম যে কেন এরকম টা হবে ? 

আমিও সংরক্ষণ এর অন্তর্গত এবং তার জন্য শিক্ষা স্থলে ও তার সুবিধা নিতে গিয়ে হেনস্থার স্বীকার হয়েছি বহুবার আমি নিজে। তখন নিজের প্রতি ঘৃনা বোধ হয়েছে আবার নিজে কে বুঝিয়েছি- এই ভেবে যে যিনি আমাকে হেনস্থা করলেন তিনি বা তার পরিবার হয়তো এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত তাই । এটা ও তর্কের বিষয় । 

এই সংরক্ষণ বিষয়ে বহু বিচার হয়েছে , সেখানে দেখা গেছে নানা মুনির নানা মত । নিৰ্দিষ্ট করে আজ ও কিছু বলা যায় নি ।

সদ্য কিছু দিন আগে এই বিষয়ে সোশ্যাল মিডিয়াতে একটা বড়ো ঝড় উঠেছিল । সেখানে প্রচুর মানুষ বাদানুবাদ ঝগড়া এমনকি কুৎসিত ভাষায় আক্রমণ করতে ও কাউকে কাউকে দেখা যায় , যারা আক্রমণ করেছিল তারা নাকি সবাই ভদ্রলোক ! যাই হোক ।

আমি আবার ও বলছি কেউ বিষয় টিকে ব্যক্তিগত নেবেন না । আমি চাই সবাই আমার এই কথা গুলো বিবেচনা করে আমার ভুল ত্রুটি সংশোধন করে দেবেন ।আজকে আমার একটা বন্ধুর সাথে উনিভার্সিটিতে ভর্তি নিয়ে কথা হচ্ছিলো , তার আক্ষেপ যে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে তার সুযোগ হয়নি । সে ভালোছাত্র , মানুষ হিসাবে সে ততধিক ভালো । তার ও সংরক্ষণ নিয়ে মত -"আমরা বেশি নম্বর পেয়েও সুযোগ পেলাম না কিন্তু sc st ছেলে মেয়েরা তুলনামূলক কম নম্বর পেয়ে ও সুযোগ পেলো ।" শুনে আমার ও তাই মনে হলো সত্যি তো ! অনেক সাধারণ কাস্টের ছেলে মেয়েরা বেশি নম্বর পেয়েও সুযোগ পায়নি ভাল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার । এবার বলি - সংরক্ষণ যিনি শুরু করেছিলেন ডক্টর বি আর আম্বেদকর তিনি 10 ও বেশি ভাষা জানতেন এবং 2 টি পিএইচডি ডিগ্রী এছাড়াও প্রায় বিশ্বের অন্যতম 8 ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন । তিনি ভারতের সংবিধান রচনা করেছিলেন । তাই তাঁর প্রতিভা , পর্যালোচন ক্ষমতা , শিক্ষা এবং দূর দৃষ্টিতার উপর সন্দেহ প্রকাশ আমাদের ধৃষ্টতা ছাড়া কিছুই নয় । কিন্তু মানুষ মাত্রেই ভুল হয় , কিংবা তখনকার পরিস্থিতি তে মানুষের সামাজিক অবস্থা পর্যালোচনা করে তিনি যা করেছিলেন এতবছর পর তার ব্যাবহারিক দিক ও গ্রহণযোগ্যতা একরকম না ও থাকতে পারে ! 

তিনি তখনকার সমাজ ব্যবস্থার উপর ভিত্তি করে যে ব্যবস্থা করেছিলেন আমার মনে হয় তা আজ ও অক্ষুন্ন আছে । সংরক্ষণ সারা জীবন থাকবেনা , একটা সময় যখন সর্বত সবাই সর্বোপরি স্বাবলম্বী হয়ে উঠবে ও সমানাধিকারে বিরাজমান থাকবে তখন সংরক্ষণ এর প্রয়োজন পড়বেনা । আর এখন যখন সংরক্ষণ এর বিরুদ্ধে কথা উঠছে তখন কোনো না কোনো ভাবে পিছিয়ে পড়া মানুষ গুলো একটু হলেও স্বাবলম্বী হচ্ছে । যেদিন সম্পূর্ণ স্বাবলম্বী হয়ে যাবে সেদিন নিজেরাই তাদের সংরক্ষণের দাবী তুলে নেবে , আর সেই দিন টি বেশি দূরে নেই ।।

এবার আসি বন্ধুটির কথায় , তার কথার যুক্তি সঙ্গত জবাব আমার কাছে ছিল কিন্তু অন্য দিকে একটা মানবিক দিক ও খোলা ছিল যা দিয়ে আমি ওকে বোঝাতে সচেষ্ট হয়েছি । ওর বাবা মা ও ওর বংশগত দিক থেকে ওরা সবাই প্রায় শিক্ষিত ।কোনো কোনো আত্মীয় বড়ো কোনো চাকরি ও করে , কাকা জেঠার ছেলে রা ভালো কোনো কোম্পানি চাকরি ও করে । কলকাতার নামি জায়গায় ঘর বাড়ি ও বেশ ।ঠিক তার উল্টো দিকে দাঁড়িয়ে আমি - প্রত্যন্ত একটা গ্রাম থেকে আসা , বাবা জমিতে চাষবাস করে কোনো রকমে চলে । হাতে গোনা কয়েকটি শিক্ষিত মানুষের ওই গ্রামটিতে বাস । পুরো গ্রামটিতে একজন ও সরকারি চাকরি করে না । এরকম হাজারো পিছিয়ে পড়া ছেলে মেয়ে এগিয়ে আসছে যাদের কোনো ভিত নেই , কোনো বংশগত গতানুগতিকতা নেই , নেই কোনো অর্থের স্বচ্ছলতা । তবুও তারা নিজেদের উপর ভরসা করে আর সংরক্ষণ এর উপর সামান্য ভর করে এগোচ্ছে । তার ঠিক উল্টো দিকে অসংরক্ষিত ছেলে মেয়েরা বংশের চাকরি করা বা ব্যবসা করা গতানুগতিকতা পাচ্ছে , সাথে তাদের কোনো আর্থিক অনটনেও পড়তে হচ্ছে না সেভাবে । তাদের শিক্ষিত পরিবার ও পথ দেখাচ্ছে । কিন্তু পিছিয়ে পড়া ছেলে মেয়েরা সেই সুযোগ সুবিধা গুলো সঠিক ভাবে পায় না , তবুও যারা ভালো ফলকরছে তারা নয় প্রতিভাশালী নয় তারা সামাজিক ও আর্থিক প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হয় নি । 

আবার এটা বলা ভুল হবে যে অসংরক্ষিত ছেলে মেয়েরা গরিব হয় না । হাঁ অনেক সাধারণ কাস্টের ছেলে রা গরিব পরিবার থেকে আসে , তবে তা তুলনামূলক কম । আবার সংরক্ষিত অনেক ছেলে মেয়েরা ও স্বচ্ছল পরিবার থেকে আসে তবে তাদের পরিমান সাধারণের থেকে তুলনামূলক পরিমানে যৎসামান্য ।  
এই সমস্ত দিক বিবেচনা করে হয়তো আজ ও দেশের প্রধান বিচারালয় ও বিজ্ঞ মানুষেরা সংরোক্ষনের পক্ষে দাঁড়িয়ে । 

সর্ব সাধারণের জন্য কোনো মতামত গ্রহণ করলে তা বিশাল ও ব্যাপক একটা দিক পর্যালোচনা করেই নিতে হয় , তাই ছোট খাটো কিছু ভুল ত্রুটি থেকেই যায় । কারণ এতো বড়ো একটা দেশে যেখানে প্রায় 150 কোটি জনসংখ্যা সেখানে বহুল পরিমান মানুষের জন্য নির্দিষ্ট যে নিয়ম করা আছে তার মধ্যে ব্যাতিক্রম বৈশিষ্ট্য যুক্ত কিছু পরিমান মানুষের জন্য আলাদা আইন করা সত্যি কষ্ট সাধ্য । বর্তমান দিনে দেশের ও রাজ্যের সরকার যেভাবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে তাতে কোনো শ্রেণীর মানুষের আর সেভাবে কোনো কষ্ট থাকবে বলে মনে হয় না !

Tuesday, February 2, 2021

ধর্ম (part 3)

বর্তমান পরিস্থিতি তে বিজ্ঞান মনস্ক হওয়া উচিত ।সচেতন নাগরিক ও সুস্থ মানুষ হিসাবে বেঁচে থাকা উচিত , কোনো ধর্মান্ধ অসুস্থ মস্তিস্ক নিয়ে বেঁচে থাকা যায় , মানুষ হওয়া যায়না ।

সর্ব ধর্ম সমন্বয় পৃথিবীতে শান্তি ফিরিয়ে আনতে পারে । যত দিন না সবাই এক হয়ে লড়বে ততো দিন মহান কর্মকাণ্ডে বিফলতা নেমে আসবে গভীর অভিশাপ রূপে । তার উৎকৃষ্ট প্রমানের জন্য একটু ইতিহাস জানা দরকার , যদিও ভারতের স্বাধীনতার   ইতিহাস কারোর অজানা নয়। হিন্দু, মুসলিম, শিখ, জৈন, ইত্যাদি বহু ধর্মীয় মানুষ সেই স্বাধীনতা আন্দোলনের মহা যজ্ঞে যদি  ঝাঁপিয়ে না পড়তো তাহলে হয়তো আজকের দিনেও আমরা বিদেশী বরাহদের শৌচালয় পরিষ্কার করতাম ।

আর আমার মনে হয় ভগবান ও হয়তো চেয়েছিলেন ভারতীয়রা পরাধীনতার কটু স্বাদ আস্বাদন করুক ! যদিও তার আগেও এরা পরোক্ষ ভাবে পরাধীন ই. ছিল ! পরাধীনতা নামক শিকলের দাগ যে কোনো ধর্ম দেখে গায়ে আঁকা থাকেনা তা ভারতীয়দের বোঝার দরকার ছিল । ভারতীয়রা যখন জাত- পাত - বর্ণ- ধর্ম নিয়ে ব্যস্ত ছিল ঠিক তখনই একদল সুবিধাভোগী ষড়যন্ত্রকারী উচ্চবিত্ত সম্পন্ন মানুষ নিজেদের পুঁজি গুছিয়ে নিচ্ছিল গরিব অবুঝ সাধারণ মানুষের রক্ত শুষে । সঙ্গ দিয়েছিলো সেই সাদা মুখো বাঁদরদের , ঠিক যেমন এখন কিছু ধর্মীয় গোঁড়ারা সাধারণ মানুষকে ভুল বুঝিয়ে ধর্মের অদৃশ্য কালপাশে বেঁধে নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব লাগিয়ে দিচ্ছে , আর সেই ফাঁকে সাধারণ মানুষের সর্বস্ব লুট করে তুলে দিচ্ছে সেই নাম জানা পুঁজিবাদীদের হাতে । এদের গায়ের রং একরকম না হলেও উদ্দেশ্য কিন্তু একই । তাই আমাদের সবার সচেতন হওয়া খুব প্রয়োজন , না হলে আমাদের উত্তরসূরিদের জন্য চরম বিপদের বিষাক্ত কুয়ো আমরা নিজেরাই খনন করে রাখছি নিজেদের অজানতেই। 

19 জানুয়ারী ব্রিসবেনের অস্ট্রেলিয়া বনাম ভারতের টেস্ট ম্যাচ টা আমাদের আবার মনে করিয়ে দেয় যে মহম্মদ ও ঠাকুরের( MD Siraj & Shardul Thakur) যৌথ লড়াইটাই ভারতের জয়টাকে নিশ্চিৎ করেছিল । তাই আমরা যদি ধর্মীয় গোঁড়ামী নামক বিষ বৃক্ষটাকে ধীরে ধীরে উৎপাটন করবার চেষ্টা করি তাহলে হয়তো একদিন আমরা অবশ্যই সফল হবো তার আশা রাখতে  পারি । 

                কৌশিক হালদার ।

Thursday, January 21, 2021

ধর্ম (part-2)

লৌকিক সংস্কৃত যুগে রামায়ণ মহাভারত এর কালে ও কোনো ধর্মীয় গোঁড়ামি দেখা যায়নি l 
কাউকে জোর করে ধর্মান্তকরণ দৃষ্টি গোচর হয় না l রামায়ণ মহাভারত সমগ্র পৃথিবীকে প্রকৃত মানব ধর্মের শিক্ষা প্রদান করে আসছে যুগ যুগ ধরে l
প্রতিনিয়ত সমগ্র মানব জাতির কাছে প্রচার করে চলেছে সত্যের জয় মিথ্যার ক্ষয় দৃৃঢ় প্রত্যয়ের সাথে l যেখানে ধর্মের মূল কথা সততার কথা বিশ্বাসের কথা বলা হয়েছে l 
  
আবারও বহু বছর পর নবদ্বীপে ভগবান শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভুর আবির্ভাব হয়েছিল l তিনি ও প্রেমের বাণী প্রচার করেছিলেন l তখনকার মুসলিম শাসক তাঁকে বারংবার কঠোর শাস্তি দিয়ে অন্যায় ভাবে নানা অত্যাচার করলেও তিনি কিন্তু প্রেমের পথ ছাড়েন নি l তাঁর লড়াইটা ছিল শিক্ষিতের সাথে মূর্খের , প্রেমের সাথে যুদ্ধের , গোঁড়ামির সাথে ধর্মের l তিনি কখন ও হিংসার পথ বেছে নেন নি l আমাদের ভুলে গেলে চলবে না , তখনকার কিছু টিক্কিধারী গোঁড়ামিরাই মহাপ্রভুর বিরোধিতা করেছিল l তিনি মানুষের মধ্যে সচেতনতা আনতে সচেষ্ট হয়েছিলেন l ￰সংস্কৃতে মহাপণ্ডিত ছিলেন l তিনি চাইলে অনায়াসে দল তৈরী করে মুসলিমদের উপর ধর্মান্তকরণের অত্যাচার করতে পারতেন কিন্তু তিনি তা কখন করেন নি l কারণ হিন্দু ধর্ম এই শিক্ষা দেয় না l ধৰ্মান্তকরণের শিক্ষা , অন্য ধর্ম আক্রমণের শিক্ষা হিন্দু ধর্ম দেয় না এমনকি কোনো ধর্মই তা দেয় না l হিন্দু ধর্ম প্রেমের ধর্ম , সহিষ্ণুতার ধর্ম , মানবতার ধর্ম , সর্বধর্ম সমন্বয়ের ধর্ম যা সমগ্র মানব জাতির নিজস্ব ধর্ম হয়ে ওঠা উচিত l 

কথায় আছে "যাকে তুমি পিছনে ফেলিতে চাও সেই তোমাকে টানিতেছে পিছে " - অর্থাৎ কাউকে আক্রমণ করে কিছু বললে, কারোর নামে কুৎসা রোটালে , কাউকে অবহেলা করে বাজে কথা বললে তাতে তোমার চরিত্রের খারাপ দিক গুলোই ফুটে ওঠে l তাছাড়া কাউকে আগে রেখে কিছু মন্তব্য করলেই তো তুমি তার পেছনে রয়ে যাচ্ছ l শিকাগোর ধর্ম সম্মেলনে কোন ধর্মগ্রন্থ সর্বোৎকৃষ্ট তার বিচারে সমগ্র ধর্মগ্রন্থ একত্রিত করা হয়েছিল l হিন্দু ধর্মের নিকৃষ্টতা প্রমানের জন্য শ্রীমদ্ভাগবদগীতা কে সমস্ত গ্রন্থের তলায় রাখা হয়l সবাই সবার ধর্মের উৎকৃষ্টতার কথা বলা শেষ হয়ে গেলে স্বামী বিবেকানন্দ কে সুযোগ দেওয়া হয় , তখন তিনি বলেন, যে সমস্ত উৎকৃষ্টতর ধর্মগ্রন্থ এখানে আছে সেই সমস্ত গুলো কে ভাগবদ্গীতা অনায়াসে অবিকৃত ভাবে ধারণ করে আছে , তাই ভাগবদ্গীতার উৎকৃষ্টতার কথা আর মুখে কি বলবো l 

কলি যুগের ভীষ্মদেব স্বামী বিবেকানন্দ শিকাগোর ধর্ম সম্মেলনে কি বলেছিলেন ? কোনো ধর্ম কে কি আক্রমণ করেছিলেন নাকি ছোট করেছিলেন ? না তিনি তা কিছুই করেন নি ! তিনি মানবতার ধর্ম দিয়ে সারা পৃথিবী জয় করেছিলেন l তাঁর আগের সমস্ত বক্তা সমগ্র পৃথিবীর মানুষের কথা বলেন নি , বলেছেন নিজ ধর্মের কথা , নিজ ধর্মের মহানুভবতার কথা , নিজ ধর্মের মানুষের কথা , গেয়েছে নিজ ধর্মের গুণ গান আর আক্রমণ করেছে সমগ্র ধর্মের মানুষ কে, অপমান করেছে অন্য সমস্ত ধর্ম কে , ধর্মের মূল কথা কে l কিন্তু বিশ্ববাসীর হৃদয়ে যার বাস সেই মহামানব সমগ্র বিশ্ব বাসীকে মানবতাধর্মের মধ্য দিয়ে ভাই বোন পিতা মাতা সম্বোধনে তাঁর অদৃশ্য বাহূযুগলে জড়িয়ে ধরেছিলেন l তিনি শান্তির বার্তা প্রচার করেছিলেন , মানুষকে ভালোবাসার শিক্ষা দিয়েছিলেন আর কোনো ধর্মের নাম না করে ও মানবতার ধর্ম সনাতন ধর্ম প্রচার করেছিলেন l যে ধর্ম মানুষকে ভালোবাসতে￰ শেখায় যে ধর্ম মানুষকে সহ্য করার ক্ষমতা যোগায় l

 তিনি প্রমান করতে চেয়েছিলেন যে হিংসা নয়  
ভালোবাসাই একমাত্র পথ বিশ্ব জয় করার l 
কত শত ধর্মীয় গোঁড়ামি পৃথিবীকে গ্রাস করতে চেয়েছিলো যুগের পর যুগ ধরে কিন্তু অসফল থেকেছে বারংবার আর থাকবেই l কোনো ধর্মের মূল কথা খারাপ হতে পারেনা ! কোনো ধর্ম গ্রন্থ ভুলে ঠাসা হয় না !কোনো ধর্মের সৎ মানুষ হিংসার বাণী প্রচার করেনা ! যারা এসব করে তারা কোনো ধর্মের মানুষই না আসলে তাদের কোনো ধর্মই নেই l তারা মানুষের এবং সমাজের অমঙ্গল ও চির শত্রু l ধর্ম ভালো কিন্তু ধর্মীয় গোঁড়ামি ভালো না l 
যারা ধর্মীয় গোঁড়ামিতে বিশ্বাসী তাদের থেকে বন্য কুকুর অনেক কম হিংস্র l ধর্মীয় গোঁড়ামি কোনো দিন কাম্য  নয় সে যে ধর্মের ই হোক না কেন l 

                           কৌশিক হালদার l 

Tuesday, January 19, 2021

যদি দেখা হয়

 যদি দেখা হয় 

বহু কাল আগে ফেলে এসেছি তাকে 
মনে আজও ঠিক পরে না ।
যত দূরে যেতে চাই 
     এ বন্ধন ছিঁড়ে 
কভু তা আমি পারিনা ।

জানে সে সবই  
জানিয়েছি অনেক আগে ।
তবু মাঝে ভুলে গিয়ে 
হেঁটেছে অনেক পথ 
আমার অনেক আগে ।

তবু কোনো দিন হয় যদি দেখা 
শুধবো আমি তারে ।
কেন সে ছেড়ে গিয়েছিলো 
আমাকে ফেলে একা 
       মরণের ওপারে ।।


                         কৌশিক হালদার 

Monday, January 11, 2021

ধর্ম

ঋগবেদে ধর্ম শব্দটিকে ক্লীব লিঙ্গে ' ধর্মন ' শব্দের দ্বারা বোঝানো হয়েছে , যাহার অর্থ "বিধান " এবং পরবর্তী কালে লৌকিক সংস্কৃত এ " ধর্ম " শব্দটিকে পুং লিঙ্গ শব্দ " ধর্ম " বলা হয়েছে যার অর্থ বিধি , অর্থাৎ যাবতীয় যা কিছু বিধি ,নিয়ম , আচার, অনুষ্ঠান আমরা মেনে চলি তাই ধর্ম l 
এক কোথায় কোনো মহান ব্যক্তি বা কোন দৈব ব্যাক্তিত্বর দ্বারা প্রদানকৃত যে সমস্ত আদেশ ,নিয়ম , আচার , বিধি , বিচার আমরা মেনে চলি তাই ই ধর্ম পদ বাচ্য l


আরো অন্যভাবে ধর্ম কে আমরা ব্যাখ্যা করতে পারি , তার উৎকৃষ্ট প্রমান ও ব্যবহার ভারতীয় স্মৃতি শাস্ত্র ও বেদ থাকে পাই, যা আজকের পরিস্থিতির সাথে প্রবল ভাবে যুক্ত l আমরা￰ ইংরেজিতে যে সমস্ত term use করি তাহাতেই প্রচুর অর্থ ভান্ডার লুকিয়ে আছে l. তার প্রমানের জন্য কিছু উপস্থাপন করছি -- ধর্ম শব্দ দিয়ে আমরা আইনকে ও বুঝিয়ে থাকি (court -ধৰ্মাধিকরণ ) l আবার বিচারক কে আমরা বলি "ধর্মাবতার " l এখানে যিনি আইনের রক্ষক ও যেখানে আইনের অধিকরণ সেই স্থানকে ও ধর্ম পদটির দ্বারা বোঝানো হচ্ছে l ধর্ম শব্দটির অর্থ ব্যাপক ও গভীর তাই 'ধর্ম' শব্দটির একটি সংকীর্ণ অর্থ প্রকাশ এর মধ্য দিয়ে গোঁড়ামি , সংরক্ষণ কিংবা অন্ধ কুসংস্কার এর অন্ধকারে মানুষ কে ঢেকে না রাখাই আমাদের কর্তব্য l

এবার আসি হিন্দু ধর্মের কথায় - প্রথমত হিন্দু বলে কোনো ধর্ম নেই যা আছে তাহলো "সনাতন" ধর্ম।
হিন্দু নাম টি গ্রিক দের কাছ থেকে পাওয়া l
তখনকার সিন্ধু সভ্যতার মানুষ জনকে তারা হিন্দু বলে জানতো l গ্রিক দের উচ্চারণ পার্থক্য জনিত কারণে 'স' কে 'হ ' বলতো তার ই ফলশ্রুতি হলো হিন্দু ( সিন্ধু - হিন্দু ) l এখান থেকেই হিন্দু শব্দ টি এসেছে এটা মেনে নিতে হয় ,তার কারণ হলো রামায়ণ , মহাভারত , বেদ , উপনিষদ কোথাও কিন্তু হিন্দু কথাটির উল্লেখ পাওয়া যায়না l তাই আমাদের মেনে নিতে হয়  এটা আমাদের পূর্ব পুরুষদের বিকৃত  নাম l

আজও, তোমায় ভালোবাসি ।

 আজও, তোমায় ভালোবাসি । জানি তোমার জানা পৃথিবীর , আমি এক অজানা আতিথি। হঠাৎ আগমনে , ধ্বংস করে দেবো না তোমার। তবুও ধূমকেতুর মতো  আমার হৃদয়টি ...