Thursday, January 21, 2021

ধর্ম (part-2)

লৌকিক সংস্কৃত যুগে রামায়ণ মহাভারত এর কালে ও কোনো ধর্মীয় গোঁড়ামি দেখা যায়নি l 
কাউকে জোর করে ধর্মান্তকরণ দৃষ্টি গোচর হয় না l রামায়ণ মহাভারত সমগ্র পৃথিবীকে প্রকৃত মানব ধর্মের শিক্ষা প্রদান করে আসছে যুগ যুগ ধরে l
প্রতিনিয়ত সমগ্র মানব জাতির কাছে প্রচার করে চলেছে সত্যের জয় মিথ্যার ক্ষয় দৃৃঢ় প্রত্যয়ের সাথে l যেখানে ধর্মের মূল কথা সততার কথা বিশ্বাসের কথা বলা হয়েছে l 
  
আবারও বহু বছর পর নবদ্বীপে ভগবান শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভুর আবির্ভাব হয়েছিল l তিনি ও প্রেমের বাণী প্রচার করেছিলেন l তখনকার মুসলিম শাসক তাঁকে বারংবার কঠোর শাস্তি দিয়ে অন্যায় ভাবে নানা অত্যাচার করলেও তিনি কিন্তু প্রেমের পথ ছাড়েন নি l তাঁর লড়াইটা ছিল শিক্ষিতের সাথে মূর্খের , প্রেমের সাথে যুদ্ধের , গোঁড়ামির সাথে ধর্মের l তিনি কখন ও হিংসার পথ বেছে নেন নি l আমাদের ভুলে গেলে চলবে না , তখনকার কিছু টিক্কিধারী গোঁড়ামিরাই মহাপ্রভুর বিরোধিতা করেছিল l তিনি মানুষের মধ্যে সচেতনতা আনতে সচেষ্ট হয়েছিলেন l ￰সংস্কৃতে মহাপণ্ডিত ছিলেন l তিনি চাইলে অনায়াসে দল তৈরী করে মুসলিমদের উপর ধর্মান্তকরণের অত্যাচার করতে পারতেন কিন্তু তিনি তা কখন করেন নি l কারণ হিন্দু ধর্ম এই শিক্ষা দেয় না l ধৰ্মান্তকরণের শিক্ষা , অন্য ধর্ম আক্রমণের শিক্ষা হিন্দু ধর্ম দেয় না এমনকি কোনো ধর্মই তা দেয় না l হিন্দু ধর্ম প্রেমের ধর্ম , সহিষ্ণুতার ধর্ম , মানবতার ধর্ম , সর্বধর্ম সমন্বয়ের ধর্ম যা সমগ্র মানব জাতির নিজস্ব ধর্ম হয়ে ওঠা উচিত l 

কথায় আছে "যাকে তুমি পিছনে ফেলিতে চাও সেই তোমাকে টানিতেছে পিছে " - অর্থাৎ কাউকে আক্রমণ করে কিছু বললে, কারোর নামে কুৎসা রোটালে , কাউকে অবহেলা করে বাজে কথা বললে তাতে তোমার চরিত্রের খারাপ দিক গুলোই ফুটে ওঠে l তাছাড়া কাউকে আগে রেখে কিছু মন্তব্য করলেই তো তুমি তার পেছনে রয়ে যাচ্ছ l শিকাগোর ধর্ম সম্মেলনে কোন ধর্মগ্রন্থ সর্বোৎকৃষ্ট তার বিচারে সমগ্র ধর্মগ্রন্থ একত্রিত করা হয়েছিল l হিন্দু ধর্মের নিকৃষ্টতা প্রমানের জন্য শ্রীমদ্ভাগবদগীতা কে সমস্ত গ্রন্থের তলায় রাখা হয়l সবাই সবার ধর্মের উৎকৃষ্টতার কথা বলা শেষ হয়ে গেলে স্বামী বিবেকানন্দ কে সুযোগ দেওয়া হয় , তখন তিনি বলেন, যে সমস্ত উৎকৃষ্টতর ধর্মগ্রন্থ এখানে আছে সেই সমস্ত গুলো কে ভাগবদ্গীতা অনায়াসে অবিকৃত ভাবে ধারণ করে আছে , তাই ভাগবদ্গীতার উৎকৃষ্টতার কথা আর মুখে কি বলবো l 

কলি যুগের ভীষ্মদেব স্বামী বিবেকানন্দ শিকাগোর ধর্ম সম্মেলনে কি বলেছিলেন ? কোনো ধর্ম কে কি আক্রমণ করেছিলেন নাকি ছোট করেছিলেন ? না তিনি তা কিছুই করেন নি ! তিনি মানবতার ধর্ম দিয়ে সারা পৃথিবী জয় করেছিলেন l তাঁর আগের সমস্ত বক্তা সমগ্র পৃথিবীর মানুষের কথা বলেন নি , বলেছেন নিজ ধর্মের কথা , নিজ ধর্মের মহানুভবতার কথা , নিজ ধর্মের মানুষের কথা , গেয়েছে নিজ ধর্মের গুণ গান আর আক্রমণ করেছে সমগ্র ধর্মের মানুষ কে, অপমান করেছে অন্য সমস্ত ধর্ম কে , ধর্মের মূল কথা কে l কিন্তু বিশ্ববাসীর হৃদয়ে যার বাস সেই মহামানব সমগ্র বিশ্ব বাসীকে মানবতাধর্মের মধ্য দিয়ে ভাই বোন পিতা মাতা সম্বোধনে তাঁর অদৃশ্য বাহূযুগলে জড়িয়ে ধরেছিলেন l তিনি শান্তির বার্তা প্রচার করেছিলেন , মানুষকে ভালোবাসার শিক্ষা দিয়েছিলেন আর কোনো ধর্মের নাম না করে ও মানবতার ধর্ম সনাতন ধর্ম প্রচার করেছিলেন l যে ধর্ম মানুষকে ভালোবাসতে￰ শেখায় যে ধর্ম মানুষকে সহ্য করার ক্ষমতা যোগায় l

 তিনি প্রমান করতে চেয়েছিলেন যে হিংসা নয়  
ভালোবাসাই একমাত্র পথ বিশ্ব জয় করার l 
কত শত ধর্মীয় গোঁড়ামি পৃথিবীকে গ্রাস করতে চেয়েছিলো যুগের পর যুগ ধরে কিন্তু অসফল থেকেছে বারংবার আর থাকবেই l কোনো ধর্মের মূল কথা খারাপ হতে পারেনা ! কোনো ধর্ম গ্রন্থ ভুলে ঠাসা হয় না !কোনো ধর্মের সৎ মানুষ হিংসার বাণী প্রচার করেনা ! যারা এসব করে তারা কোনো ধর্মের মানুষই না আসলে তাদের কোনো ধর্মই নেই l তারা মানুষের এবং সমাজের অমঙ্গল ও চির শত্রু l ধর্ম ভালো কিন্তু ধর্মীয় গোঁড়ামি ভালো না l 
যারা ধর্মীয় গোঁড়ামিতে বিশ্বাসী তাদের থেকে বন্য কুকুর অনেক কম হিংস্র l ধর্মীয় গোঁড়ামি কোনো দিন কাম্য  নয় সে যে ধর্মের ই হোক না কেন l 

                           কৌশিক হালদার l 

Tuesday, January 19, 2021

যদি দেখা হয়

 যদি দেখা হয় 

বহু কাল আগে ফেলে এসেছি তাকে 
মনে আজও ঠিক পরে না ।
যত দূরে যেতে চাই 
     এ বন্ধন ছিঁড়ে 
কভু তা আমি পারিনা ।

জানে সে সবই  
জানিয়েছি অনেক আগে ।
তবু মাঝে ভুলে গিয়ে 
হেঁটেছে অনেক পথ 
আমার অনেক আগে ।

তবু কোনো দিন হয় যদি দেখা 
শুধবো আমি তারে ।
কেন সে ছেড়ে গিয়েছিলো 
আমাকে ফেলে একা 
       মরণের ওপারে ।।


                         কৌশিক হালদার 

Monday, January 11, 2021

ধর্ম

ঋগবেদে ধর্ম শব্দটিকে ক্লীব লিঙ্গে ' ধর্মন ' শব্দের দ্বারা বোঝানো হয়েছে , যাহার অর্থ "বিধান " এবং পরবর্তী কালে লৌকিক সংস্কৃত এ " ধর্ম " শব্দটিকে পুং লিঙ্গ শব্দ " ধর্ম " বলা হয়েছে যার অর্থ বিধি , অর্থাৎ যাবতীয় যা কিছু বিধি ,নিয়ম , আচার, অনুষ্ঠান আমরা মেনে চলি তাই ধর্ম l 
এক কোথায় কোনো মহান ব্যক্তি বা কোন দৈব ব্যাক্তিত্বর দ্বারা প্রদানকৃত যে সমস্ত আদেশ ,নিয়ম , আচার , বিধি , বিচার আমরা মেনে চলি তাই ই ধর্ম পদ বাচ্য l


আরো অন্যভাবে ধর্ম কে আমরা ব্যাখ্যা করতে পারি , তার উৎকৃষ্ট প্রমান ও ব্যবহার ভারতীয় স্মৃতি শাস্ত্র ও বেদ থাকে পাই, যা আজকের পরিস্থিতির সাথে প্রবল ভাবে যুক্ত l আমরা￰ ইংরেজিতে যে সমস্ত term use করি তাহাতেই প্রচুর অর্থ ভান্ডার লুকিয়ে আছে l. তার প্রমানের জন্য কিছু উপস্থাপন করছি -- ধর্ম শব্দ দিয়ে আমরা আইনকে ও বুঝিয়ে থাকি (court -ধৰ্মাধিকরণ ) l আবার বিচারক কে আমরা বলি "ধর্মাবতার " l এখানে যিনি আইনের রক্ষক ও যেখানে আইনের অধিকরণ সেই স্থানকে ও ধর্ম পদটির দ্বারা বোঝানো হচ্ছে l ধর্ম শব্দটির অর্থ ব্যাপক ও গভীর তাই 'ধর্ম' শব্দটির একটি সংকীর্ণ অর্থ প্রকাশ এর মধ্য দিয়ে গোঁড়ামি , সংরক্ষণ কিংবা অন্ধ কুসংস্কার এর অন্ধকারে মানুষ কে ঢেকে না রাখাই আমাদের কর্তব্য l

এবার আসি হিন্দু ধর্মের কথায় - প্রথমত হিন্দু বলে কোনো ধর্ম নেই যা আছে তাহলো "সনাতন" ধর্ম।
হিন্দু নাম টি গ্রিক দের কাছ থেকে পাওয়া l
তখনকার সিন্ধু সভ্যতার মানুষ জনকে তারা হিন্দু বলে জানতো l গ্রিক দের উচ্চারণ পার্থক্য জনিত কারণে 'স' কে 'হ ' বলতো তার ই ফলশ্রুতি হলো হিন্দু ( সিন্ধু - হিন্দু ) l এখান থেকেই হিন্দু শব্দ টি এসেছে এটা মেনে নিতে হয় ,তার কারণ হলো রামায়ণ , মহাভারত , বেদ , উপনিষদ কোথাও কিন্তু হিন্দু কথাটির উল্লেখ পাওয়া যায়না l তাই আমাদের মেনে নিতে হয়  এটা আমাদের পূর্ব পুরুষদের বিকৃত  নাম l

আজও, তোমায় ভালোবাসি ।

 আজও, তোমায় ভালোবাসি । জানি তোমার জানা পৃথিবীর , আমি এক অজানা আতিথি। হঠাৎ আগমনে , ধ্বংস করে দেবো না তোমার। তবুও ধূমকেতুর মতো  আমার হৃদয়টি ...